ওসিডির জন্য কখন চিকিৎসা নিবেন? কার কাছ থেকে নিবেন? সাইক্রিয়াটিস্ট, সাইকোলজিস্ট নাকি অন্য কোন ডক্টর?

ওসিডির জন্য কখন চিকিৎসা নিবেন?

ইংরেজিতে একটি কথা আছে prevention is better than cure অর্থাৎ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। শারীরিক কিংবা মানসিক রোগ হওয়ার থেকে, রোগ হওয়ার আগেই চিকিৎসা নেওয়া হলে সময়, অর্থ ও ভোগান্তি অনেকাংশ কমিয়ে নেয়া যায়। ওসিডির জন্য কখন চিকিৎসা নিবেন? কার কাছ থেকে নিবেন? সাইক্রাটিস্ট, সাইকোলজিস্ট নাকি অন্য কোন ডক্টর?

চলুন একটি ঘটনার মাধ্যমে ব্যাপারটি জানা যাক।

লেখক:

Asadujjaman Raju, MPhil Research Fellow, DU
Counselling psychologist
and Member Secretary, OCDclinic & Research Foundation.
Hotline: 01681006726
222/1B, South Pirerbag, Mirpur-2, Dhaka -1216

কেইস: 

হেনা (৪৭) (ছদ্মনাম) ওসিডি ক্লিনিক এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনে কিছু মানসিক সমস্যার জন্য এসেছিল।

বিঃ দ্রঃ সে আগে থেকেই জেনে এসেছিল যে, এখানে সে সাইক্রিয়াটিস্ট এবং সাইকোলজিস্টের চিকিৎসা পাবে।

raju akon youtube channel subscribtion

* ** হেনা ২০১০ সাল থেকে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুক্ত। যেমন: জামা কাপড় পছন্দের ক্ষেত্রে, বাহিরে ভ্রমনের ক্ষেত্রে, প্রতিদিন রান্না করার ক্ষেত্রে মেনু নির্ধারণ ইত্যাদি। প্রথম থেকে আশেপাশের মানুষ বিরক্ত হত পরবর্তীতে মাঝে মাঝে রাগ হত। একটি সময় সে বুঝতে পারে তার কাছের আত্মীয় স্বজন বিরক্ত। তখন থেকে তার মন খারাপ হওয়া শুরু হয় এবং তীব্র বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা ও হতাশায় ভুগতে থাকেন। এরপর তার স্বামী তাকে একজন মেডিসিন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সে মেডিসিন ডক্টর এর কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিল। এই সময়ের মধ্যে তার মধ্যে ওসিডির কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন: বারবার হাত ধোওয়া, সেক্স ও সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে নানা রকম আজেবাজে চিন্তা।

২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একজন নামকরা সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছ থেকে সাইক্রাটিক মেডিসিন নেন।

অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২০১৯ থেকে ২০২২ এর মাঝামাঝি সাল পর্যন্ত অন্য একজন সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে চিকিৎসা নেন।

For More Reading: অনেক ট্রিটমেন্ট নিয়েছি ওসিডি থেকে মুক্ত হতে পারিনি.! সঠিক প্রক্রিয়ায় কিভাবে ট্রিটমেন্ট নিবেন?

২০২২ এর মাঝামাঝি সময়ের পর তার ওসিডির লক্ষণগুলো পুরোপুরি না যাওয়ায় সে অন্য একজন সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছে যান। সেই সাইক্রিয়াটিস্ট ডায়াগনোসিস করে কিছু ওষুধ দিয়ে ৩ মাস তার কেসটিকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং কিছু এডজাস্টমেন্ট ইসু এর জন্য একজন কাউন্সিলিং সাইকোলজিস্ট এর কাছে রেফার করেন।

কাউন্সিলিং সাইকোলজিস্ট কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে তার বর্তমান সমস্যাগুলো তাকে এক্সপ্লোর করতে সাহায্য করেন।

কাউন্সিলিং এর সে বুঝতে পেরেছিল যে তার দ্বিধাদ্বন্দ্ব শুরু হয় ১৯৯৩ সালে তার বিয়ের পর থেকে। তার থেকে তার হাজবেন্ডের বয়সের যে ব্যবধান তা তার মেনে নিতে লজ্জা, হীনমন্যতা, বিরক্ত, মাঝে মাঝে রাগ, কষ্ট ও বিষন্ন থাকতো।

কাউন্সিলের এর মাধ্যমে সে বুঝতে পেরেছিল তার স্বামী তাকে অনেক ভালোবাসে এবং বয়সের ব্যবধান কিছুই না। ২০১০ সালের পর সে অনেক বেশি মানসিক চাপ অনুভব করতো এবং একসময় ওসিডির লক্ষণগুলো তারমধ্যে চলে এসেছিল। সে আরও বুঝতে পারে যে, তার আত্মীয়-স্বজনরা তার ভালোই চায়। তার চিকিৎসার জন্য তারা সব সময় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে তাই তাদের প্রতি রাগ কিংবা অভিযোগ নেই। সে আগের থেকে ভাল অনুভব করছে। ওসিডির লক্ষণগুলো আগের থেকে অনেক কম। এরপর কাউন্সিলিং সাইকোলজিস্ট তাকে কিছু সেল্ফ-হেল্প টেকনিক শিখিয়ে দেন।

সুতরাং সে যদি ৩য় সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছে প্রথমেই যেত এবং তার সঠিক পদ্ধতিতে ডায়াগনোসিস, সাইকেলট্রিক মেডিসিন ও পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে সে যদি একজন কাউন্সিলিং সাইকোলজিস্ট এর কাছে আগেই রেফার করতো তাহলে প্রায় ১২ বছরের পথ চলা, অর্থ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে টানাপোড়ন থাকতো না।

শারীরিক কিংবা মানসিক চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে আগে থাকতেই প্রতিষ্ঠান কিংবা পেশাজীবীর বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে চিকিৎসা নেওয়াই উত্তম।

For More Reading:

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top