বাচ্চাদের চিকেন পক্স হলে করণীয়: সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে দ্রুত সুস্থতা নিশ্চিত করুন

চিকেন পক্স, বাংলায় যা জলবসন্ত নামে পরিচিত, শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর রোগ। এটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা ভেরিসেলা-জস্টার ভাইরাসের কারণে হয়। চিকেন পক্স হলে শিশুদের ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি, জ্বর এবং অস্বস্তি দেখা দেয়। যদিও এটি সাধারণত জীবনঘাতী নয়, সঠিক পরিচর্যা ও সচেতনতা না থাকলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এই ব্লগে আমরা জানবো, বাচ্চাদের চিকেন পক্স হলে কী করণীয় এবং কীভাবে তাদের আরামদায়ক রাখা যায়।

চিকেন পক্সের লক্ষণ ও কারণ

লক্ষণসমূহ:

  • ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি, যা পরে ফোস্কায় পরিণত হয়।
  • জ্বর (১০১°F থেকে ১০৪°F পর্যন্ত হতে পারে)।
  • মাথাব্যথা ও ক্লান্তি।
  • ক্ষুধামন্দা।
  • ফুসকুড়ির কারণে তীব্র চুলকানি।

কারণ:
চিকেন পক্স মূলত ভেরিসেলা-জস্টার ভাইরাসের সংক্রমণে হয়। এটি হাঁচি, কাশি, এবং সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ছড়ায়।

raju akon youtube channel subscribtion

বাচ্চাদের চিকেন পক্স হলে করণীয়

১. ত্বকের পরিচর্যা নিশ্চিত করুন

  • ফুসকুড়ি চুলকানোর প্রবণতা থাকলে বাচ্চার নখ ছোট করে কেটে দিন।
  • ফোস্কায় হাত দেওয়া থেকে বিরত রাখুন, যাতে সংক্রমণ না হয়।
  • চুলকানি কমানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করুন।

২. হালকা ও আরামদায়ক পোশাক পরান

  • বাচ্চাকে সুতি ও হালকা কাপড় পরান।
  • ঘাম থেকে ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করান।

৩. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পানীয় গ্রহণ

  • শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে দিন।
  • শরীরে পানির অভাব এড়াতে প্রচুর পানি, ডাবের পানি এবং তরল খাবার দিন।

৪. জ্বর ও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে ওষুধ দিন

  • জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল দিন। তবে, অ্যাসপিরিন এড়িয়ে চলুন কারণ এটি রেইয়ের সিন্ড্রোমের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ওষুধ দেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৫. আলাদা রাখুন

  • বাচ্চাকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা রাখুন।
  • রোগটি অত্যন্ত সংক্রামক হওয়ায় ৭-১০ দিন আলাদা রাখা উচিত।

চিকেন পক্স প্রতিরোধে করণীয়

১. ভ্যাকসিনেশন

চিকেন পক্স প্রতিরোধে ভেরিসেলা ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর। শিশুকে নির্ধারিত সময়ে ভ্যাকসিন দিন।

২. সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ

  • সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকুন।
  • শিশুর হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

পরামর্শ: কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন

যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন:

  • ফুসকুড়ি থেকে পুঁজ বা রক্তপাত।
  • বাচ্চার শ্বাসকষ্ট।
  • ১০ দিনের পরেও জ্বর না কমা।
  • তীব্র ক্লান্তি বা অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা।

উপসংহার:
চিকেন পক্স শিশুদের জন্য অস্বস্তিকর হলেও সঠিক যত্ন ও চিকিৎসায় এটি দ্রুত নিরাময় সম্ভব। রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন এবং সংক্রমণের সময় পরিচর্যা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। আপনার সন্তানের সুস্থতার জন্য সচেতন হন এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top