আজকে কিছু কথা শেয়ার করব। কথাগুলো বড় হতে পারে।
আমি OCD থেকে পুরোপুরি সুস্থ। আমি আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করব ।
আমার অসুস্থতা শুরু হয় মস্তিষ্কে ডোপামিন কমার মাধ্যমে। আমার দরকার ছিল ডোপামিন বাড়ানোর এন্টিডিপ্রেশন (বাংলাদেশে ডোপামিন বাড়ানোর এন্টিডিপ্রেশন পাওয়া যায় না) কিন্তু ডাক্তার দেয় সেরোটোনিন বাড়ানোর এন্টিডিপ্রেশন ফলাফলস্বরূপ আমার কাজের কাজ কিছুই হয় না। আর OCD ডেভলপ করে। পরবর্তীতে চারটি ডাক্তার দেখাই। যতবার ডাক্তার দেখায় ততবার অবনতি হয়। কাউন্সিলিংও করিয়েছিলাম লাভের লাভ কিছু হয়নি। বলে রাখা ভালো যদি আপনার মস্তিষ্কের কন্ডিশন কাউন্সিলিং নেওয়ার মতো না হয় তাহলে আসলে কাউন্সিলিং নিয়ে কোন লাভ হয় না। নিরুপাই হয়ে জ্ঞান অর্জন শুরু করি।
এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছিলাম Andrew huberman নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে। সেখানে সবকিছু অনেক বিস্তারিত আলোচনা করা হতো। আমি জানতাম আমার কি ঔষুধ দরকার কিন্তু ডাক্তার সেটা দিত না। আমি আমার কথার মাধ্যমে অনেকবার ডাক্তারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম আমার লক্ষণগুলো কিন্তু তারা রোগীকে যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে আগ্রহী নয়। বাইরের দেশে ৩০ মিনিট কথা শোনার পর আপনাকে ওষুধ দেওয়া হবে। মস্তিষ্কের রোগে রোগীর প্রতিটা কথার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিটা কথার ভেতরে অনেক সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে যা ধরার মাধ্যমে আপনাকে সঠিক ঔষধ বাছাই করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ ডোপামিন এবং সেরাটোনিন দুইটা কম হলে আপনার ডিপ্রেশন হবে কিন্তু দুইটার লক্ষণ আলাদা হবে। ডোপামিন কম হলে আপনার মোটিভেশন কমে আসবে, মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাবে, কোনো কিছু করতে ইচ্ছা হবে না।
সেরাটোনিন কম হলে আপনার অনেক কাঁদতে ইচ্ছা করবে, অতীতের কোনো কাজের জন্য নিজেকে দোষারোপ করতে ইচ্ছা হবে এরকম সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। আমি যখন ডাক্তারকে এই কথাগুলো বলি আমার কথার কোন গুরুত্ব না দিয়ে তিনি এন্টিডিপ্রেশন ডোজ বাড়ায় দেন। আমার অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল যে বিছানা থেকে উঠে ভাত খাওয়ার আর কোন ইচ্ছা ছিল না। কোন একটা ভিডিও আমাকে দেখতে দিলে আমি দেখে বলতে পারবোনা আমি কি দেখলাম, আমার ফোকাস এতটা কমে গিয়েছিল। অথচ ওই সময় আমি ছয়টা এন্টি ডিপ্রেশনের উপরে ছিলাম। কাউন্সিলিংও করাইছিলাম কিন্তু কোনো লাভ হলো না। মস্তিষ্ক আসলে কাউন্সিলিং নেওয়ার কন্ডিশনে ছিল না। নিরুপায় হয়ে নিজের জীবনের শেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। হয় আমি ওষুধ নিজে খাব না হয় এভাবেই মারা যাবো। আমি স্টিমুলেন্ট মেডিসিন খাই। দুইদিন পর আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাই। এক মাসের মধ্যে আমার OCD চলে যায়।
সাম্প্রতিক আমি ডাক্তার দেখিয়েছিলাম এবং ডাক্তারকে বিষয়গুলো বলেছিলাম তিনি বিশ্বাস করেননি যে এতে আমি সুস্থ হয়েছি তিনি আমাকে আগের ওষুধ গুলো লিখে দিয়েছেন যা আমি দুইদিন খাওয়ার পর আমার অবস্থা আবার খারাপ হয়ে যেতে লেগেছিল। তারপর বুঝলাম বাংলাদেশে ডাক্তারদের অবস্থা আসলে কতটা উন্নত।
মেডিকেল বইয়েও OCD তে স্টিমুলেন্টের ব্যাপারে লেখা রয়েছে যদিও এ ব্যাপারে গবেষণা অনেক কম হয়েছে। আমি বাইরের দেশের রোগীদের সাথেও কথা বলেছি তাদের দেশে এই ব্যাপার নিয়ে কোন সমস্যা নেই। তাই বাংলাদেশে আদৌ ডাক্তার দেখানো উচিত কিনা এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছি। আমি কাউকে কোন পরামর্শ দিচ্ছি না। যদি আপনি কোন ঔষুধ চেষ্টা করতে চান তাহলে নিজের রিস্কে চেষ্টা করুন। কিন্তু এটা বলতে পারি প্রচুর জ্ঞান অর্জন করুন কারণ আপনি হয়তো আরো বেশি সুস্থ হতে পারবেন।
আমার ঔষুধ মাঝেমধ্যে কাজ করা বন্ধ করে দেয় (স্টিমুলেন্ট ঔষুধের টলারেন্স বলে একটি বিষয় রয়েছে আর বাংলাদেশে শুধু একটা ওষুধ পাওয়া যায়)পুরোপুরি কাজ করা বন্ধ করে দিলে কি করব জানিনা কারণ এখন আমার সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হয় কোন ডাক্তার আমাকে বিশ্বাস করে না।এত বড় লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
Curiosity