Disruptive mood dysregulation disorder কি? এবং এর জন্য সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক যা নিজের উপরে এপ্লাই করা যায়

Disruptive Mood Dysregulation Disorder (DMDD) কি?

Disruptive Mood Dysregulation Disorder (DMDD) হল একটি শিশু-কিশোরদের মানসিক সমস্যা, যেখানে শিশুরা অত্যধিক মেজাজের ওঠানামা এবং নিয়মিত ক্রোধের অপ্রত্যাশিত এবং তীব্র প্রকাশের সম্মুখীন হয়। সাধারণত ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায় এবং এটি তাদের সামাজিক, পারিবারিক এবং শিক্ষাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। DMDD কে প্রায়ই অন্য মানসিক সমস্যার সাথে মিশ্রিত করে দেখা হয়, যেমন ADHD বা অটিজম।

DMDD এর লক্ষণ

DMDD আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা যায়:

  1. তীব্র ক্রোধের অপ্রত্যাশিত বিস্ফোরণ: শিশুরা নিয়মিতভাবে তীব্র এবং অপ্রয়োজনীয় ক্রোধ প্রদর্শন করে।
  2. মেজাজের অস্থিতিশীলতা: তাদের মেজাজ খুব দ্রুত পরিবর্তন হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে ক্রোধপূর্ণ থাকে।
  3. বয়সের তুলনায় আচরণগত অপ্রতুলতা: শিশুদের আচরণ তাদের বয়সের জন্য অনুপযুক্ত এবং অতিরিক্ত মনে হয়।
  4. নিয়মিত মেজাজের সমস্যা: সপ্তাহে তিন বা তারও বেশি বার ক্রোধের বিস্ফোরণ হয়।

raju akon youtube channel subscribtion

DMDD এর জন্য সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক

DMDD মোকাবিলার জন্য Cognitive Behavioral Therapy (CBT) অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। নিম্নলিখিত সিবিটি থেরাপির টেকনিকগুলো DMDD আক্রান্ত শিশুরা নিজের উপর প্রয়োগ করতে পারে:

১. আবেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল (Emotion Regulation Techniques)

DMDD আক্রান্ত শিশুরা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বলে প্রায়ই তীব্র ক্রোধের বিস্ফোরণ ঘটে। তাই তাদের শিখানো উচিত কিভাবে তারা এই আবেগগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করবে।

উদাহরণস্বরূপ:

  • ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া এবং ক্রোধের মুহূর্তে ১০ পর্যন্ত গণনা করা।
  • পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে অন্য কিছুতে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা।

২. চিন্তা পুনর্গঠন (Cognitive Restructuring)

DMDD আক্রান্ত শিশুরা নেতিবাচক চিন্তার ফাঁদে পড়ে যায়। তাদের শেখানো উচিত কিভাবে এই চিন্তাগুলো পুনর্গঠন করতে হয়।

উদাহরণস্বরূপ:

  • “সবাই আমাকে অপছন্দ করে” এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তাকে “সবাইকে আমার মত হতে হবে না, কিন্তু কিছু লোক আমাকে পছন্দ করতে পারে” এইভাবে পুনর্গঠন করা।

৩. প্রশান্তির কৌশল (Relaxation Techniques)

রিল্যাক্সেশন কৌশল শিশুদের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তারা শিখতে পারে ধ্যান করা, গভীর শ্বাস নেওয়া, এবং শান্ত পরিবেশে কিছুক্ষণ বসে থাকা।

উদাহরণস্বরূপ:

  • প্রতিদিন সকালে বা রাতে কয়েক মিনিটের জন্য ধ্যান করা।
  • ক্রোধের মুহূর্তে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া এবং শ্বাস ছাড়া।

৪. সামাজিক দক্ষতা বিকাশ (Social Skills Training)

DMDD আক্রান্ত শিশুদের সামাজিক দক্ষতা উন্নত করা প্রয়োজন। তাদের শেখানো উচিত কিভাবে অন্যদের সাথে সঠিকভাবে মিশতে হয় এবং অন্যদের আবেগ বুঝতে হয়।

উদাহরণস্বরূপ:

  • অন্যদের সাথে কথা বলার সময় তাদের অনুভূতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা।
  • সামাজিক যোগাযোগের সময় সহানুভূতিশীল হওয়া।

৫. পজিটিভ রিওয়ার্ড সিস্টেম (Positive Reinforcement)

পজিটিভ রিওয়ার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে শিশুদের মধ্যে সঠিক আচরণ বজায় রাখা সম্ভব। তারা যখন সঠিকভাবে তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়, তখন তাদের প্রশংসা করা উচিত।

উদাহরণস্বরূপ:

  • প্রতি সপ্তাহে সঠিক আচরণের জন্য একটি ছোট উপহার দেওয়া।
  • পরিবারের সকলের সামনে শিশুর সঠিক আচরণের প্রশংসা করা।

উপসংহার

Disruptive Mood Dysregulation Disorder (DMDD) একটি চ্যালেঞ্জিং সমস্যা হলেও সঠিকভাবে সিবিটি থেরাপি প্রয়োগের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। উপরে বর্ণিত টেকনিকগুলো শিশুরা নিজে নিজে প্রয়োগ করতে পারে এবং এতে তাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। সতর্কভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে এই টেকনিকগুলো প্রয়োগ করলে শিশুদের মেজাজের অস্থিতিশীলতা কমে আসবে এবং তাদের দৈনন্দিন জীবন মানের উন্নতি হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top