থুতনির নিচে গুটি দেখা দিলে অনেক সময় আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। তবে এটি সব সময় বড় কোনো রোগের লক্ষণ নাও হতে পারে। থুতনির নিচে গুটি হওয়ার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ হলো:
- লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া:
- সংক্রমণ বা প্রদাহের কারণে লিম্ফ নোড ফুলে যেতে পারে। সর্দি, গলা ব্যথা বা ভাইরাসজনিত সংক্রমণের পর এটি হওয়া স্বাভাবিক।
- সেবাসিয়াস সিস্ট:
- এটি ত্বকের নিচে তৈলগ্রন্থি আটকে গেলে দেখা দেয়। সাধারণত এটি ব্যথাহীন হয় এবং ধীরে ধীরে বড় হতে পারে।
- ইনফেকশন বা ফোঁড়া:
- ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে ত্বকের নিচে ফোঁড়া হতে পারে। এটি ব্যথা, লালচে ভাব এবং পুঁজযুক্ত হতে পারে।
- এলার্জি বা ত্বকের প্রদাহ:
- কোনো অ্যালার্জি বা কসমেটিকসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে থুতনির নিচে গুটি হতে পারে।
- ডেন্টাল সমস্যা:
- দাঁতের সংক্রমণ বা গাম ইনফেকশনের কারণে থুতনির নিচে গুটি দেখা দিতে পারে। এটি সাধারণত ব্যথাসহ হয়।
- টিউমার বা ক্যানসার:
থুতনির নিচে গুটি নির্ণয়ের উপায়
থুতনির নিচে গুটি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে এর কারণ নির্ণয় করা হয়:
- শারীরিক পরীক্ষা:
- চিকিৎসক গুটির আকার, অবস্থান এবং টেক্সচার পরীক্ষা করবেন।
- রক্ত পরীক্ষা:
- সংক্রমণ বা প্রদাহের উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
- আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যান:
- গুটির ভেতরের গঠন বুঝতে ইমেজিং টেস্ট করা হতে পারে।
- বায়োপসি:
- যদি গুটি সন্দেহজনক হয়, তবে টিস্যু নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণ করা হয়।
থুতনির নিচে গুটি প্রতিরোধ ও প্রতিকার
থুতনির নিচে গুটি প্রতিরোধ এবং এটি হলে আরাম পাওয়ার জন্য কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে:
- সংক্রমণ এড়িয়ে চলুন:
- হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং ত্বক পরিষ্কার রাখুন।
- হালকা গরম সেঁক দিন:
- ব্যথা কমাতে এবং প্রদাহ দূর করতে হালকা গরম সেঁক উপকারী।
- ওষুধ সেবন:
- ব্যথা বা সংক্রমণের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক বা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করুন।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন:
- শরীরকে বিশ্রামে রাখলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সংক্রমণ দ্রুত সারে।
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন:
- ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- গুটি যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে বা আকারে বাড়ে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
উপসংহার
থুতনির নিচে গুটি একটি সাধারণ সমস্যা, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রমণ বা সাময়িক প্রদাহের কারণে হয়। তবে এটি যদি দীর্ঘস্থায়ী বা ব্যথাযুক্ত হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিজে থেকে ওষুধ ব্যবহার না করে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া সব সময় গুরুত্বপূর্ণ।