শীতেও সুস্থ ত্বক: সহজ কিছু উপায়

শীতকালে আমাদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ত্বক শুষ্ক, খসখসে ও ফাটতে শুরু করে। এছাড়া ঠান্ডার কারণে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, যেমন র‍্যাশ, চুলকানি, ফাটা ঠোঁট, ও হাত-পা ফাটা। তবে সঠিক যত্ন নিলে শীতেও ত্বককে মসৃণ ও স্বাস্থ্যকর রাখা সম্ভব।

শীতকালে ত্বকের সমস্যাগুলো কী কী?

শীতের সময় বেশ কিছু সাধারণ ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়:

  • ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায় বাতাসে আর্দ্রতার অভাবে।
  • ঠোঁট ফেটে যায়, ঠান্ডা বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে।
  • হাত-পা ফেটে যাওয়া: হাত ও পায়ের ত্বক এই সময়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • র‍্যাশ ও চুলকানি: শীতে অনেকের ত্বকে র‍্যাশ বা চুলকানি দেখা দেয়, যা অতিরিক্ত শুষ্কতার জন্য হয়।

raju akon youtube channel subscribtion

শীতেও ত্বক সুস্থ রাখার সহজ উপায়

শীতকালে ত্বকের সঠিক যত্ন নিলে এসময়ও ত্বক কোমল ও মসৃণ রাখা সম্ভব। নিচে কিছু কার্যকরী পদ্ধতি আলোচনা করা হলো যা শীতকালে ত্বকের সুরক্ষায় সহায়ক:

১. নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন

শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন গোসলের পর এবং রাতে শোবার আগে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। ত্বক শুকিয়ে যাওয়ার আগেই এটি ব্যবহার করলে ময়েশ্চার ত্বকে ভালোভাবে ঢুকে যাবে এবং ত্বক নরম থাকবে। প্রাকৃতিক তেলের সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার যেমন কোকোনাট অয়েল, অ্যালোভেরা জেল, বা শিয়া বাটার ব্যবহার করা ভালো।

২. ঠান্ডা পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন

গোসলের সময় অনেকেই খুব গরম পানি ব্যবহার করেন, যা ত্বকের আর্দ্রতা আরও শুষ্ক করে তোলে। তাই খুব বেশি গরম পানি না ব্যবহার করে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত।

৩. হাইড্রেটেড থাকুন

শীতের সময়ে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে অনেকেই পানি কম পান করেন, যা ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়। শরীরকে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পানি পান করা উচিত, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখবে।

৪. লিপ বাম ব্যবহার করুন

শীতকালে ঠোঁট ফাটার সমস্যা খুব সাধারণ। ঠোঁট ফাটা এড়াতে লিপ বাম বা প্রাকৃতিক তেলের বাম ব্যবহার করা উচিত, যা ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে এবং ফাটা ঠোঁট দ্রুত সারাতে সহায়তা করে।

৫. সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না

শীতকালে সূর্যের প্রখরতা কম থাকলেও আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাড়ির বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। শীতের রোদও ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

৬. পুষ্টিকর খাবার খান

ত্বকের সুস্থতায় খাবারের বড় ভূমিকা রয়েছে। শীতকালে ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাতে ভিটামিন CE সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, লেবু, বাদাম, গাজর, ও সবুজ শাকসবজি খাওয়া উচিত। এই খাবারগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।

৭. তুলার পোশাক পরুন

শীতকালে ত্বক শুষ্ক ও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, তাই তুলার তৈরি নরম পোশাক পরা ভালো। এতে ত্বককে শ্বাস নিতে দেয় এবং অস্বস্তিকর চুলকানি এড়ানো যায়।

৮. ত্বক ঘষে পরিষ্কার করবেন না

শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ফলে অনেকেই ত্বক ঘষে পরিষ্কার করেন, যা ত্বকের ক্ষতি করে। এর পরিবর্তে মাইল্ড ফেসওয়াশ বা ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত, যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে এবং র‍্যাশ বা চুলকানি কমাবে।

৯. অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না

শীতকালে অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করা ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। তাই খুব বেশি সাবান ব্যবহার না করে, নরম ময়েশ্চারাইজিং সাবান ব্যবহার করুন।

১০. ত্বকের জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন

শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ানোর জন্য প্রাকৃতিক উপাদান যেমন মধু, দই, ও কোকোনাট অয়েল দিয়ে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বক নরম ও উজ্জ্বল থাকবে।

উপসংহার

শীতকালে ত্বকের সঠিক যত্ন নিলে ত্বককে শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার, পর্যাপ্ত পানি পান এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ত্বককে সুস্থ রাখা যায়। শীতেও ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় রাখতে প্রাকৃতিক যত্নের কোনো বিকল্প নেই।

ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top