রক্ত আমাশয়ের লক্ষণ

রক্ত আমাশয় (Dysentery) হলো এমন একটি পেটের রোগ, যা সাধারণত ব্যাকটেরিয়া বা প্রোটোজোয়ার সংক্রমণের কারণে হয়। এই রোগে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া এবং মলের সাথে রক্তপাত ঘটে। সাধারণত, অস্বাস্থ্যকর খাবার বা পানি থেকে এই রোগটি ছড়ায় এবং তা দ্রুত শরীরে সংক্রমিত হয়। দ্রুত চিকিৎসা না করলে রক্ত আমাশয় বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

রক্ত আমাশয়ের প্রধান লক্ষণসমূহ:

১. ডায়রিয়া

রক্ত আমাশয়ের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো ডায়রিয়া, যা ঘন ঘন এবং পানির মতো হয়। ডায়রিয়ার সাথে মলের মধ্যে রক্ত বা পুঁজের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যেতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

২. পেট ব্যথা

রক্ত আমাশয়ে পেটের নিচের অংশে তীব্র ব্যথা হতে পারে। পেটের ব্যথা সাধারণত মলত্যাগের সময় বেশি অনুভূত হয়।

৩. মলের সাথে রক্তপাত

রক্ত আমাশয়ের একটি অন্যতম লক্ষণ হলো মলের সাথে রক্তপাত। এটি সাধারণত একাধিক মলত্যাগের পর লক্ষ্য করা যায়। মলটি সাধারণত ঘন এবং কালো রঙের হতে পারে।

৪. জ্বর ও ঠান্ডা লাগা

রক্ত আমাশয়ের সংক্রমণে জ্বর হতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রা এবং শারীরিক দুর্বলতার কারণে শরীরে ঠান্ডা লাগতে পারে।

৫. বমি বা বমি বমি ভাব

রক্ত আমাশয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অনেক সময় বমি বা বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন। এ ধরনের উপসর্গ সাধারণত ডিহাইড্রেশনের কারণে হতে পারে।

৬. শরীরের পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)

ডায়রিয়া ও বমির ফলে শরীরে তরল পদার্থের ঘাটতি ঘটে, যা পানিশূন্যতার সৃষ্টি করতে পারে। এতে শুষ্ক ত্বক, মুখের শুষ্কতা, পিপাসা, মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া, এবং মাথা ঘোরা অনুভূত হতে পারে।

৭. ক্ষুধামান্দ্য

রক্ত আমাশয়ের কারণে রোগীর ক্ষুধা কমে যেতে পারে। দীর্ঘদিন ক্ষুধা না লাগলে শরীরে দুর্বলতা আসতে পারে এবং ওজন হ্রাস পেতে পারে।

রক্ত আমাশয়ের কারণ:

  • ব্যাকটেরিয়া: শিগেলা, সালমোনেলা, বা ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে রক্ত আমাশয় হতে পারে।
  • প্রোটোজোয়া: অ্যামিবা প্রোটোজোয়া সংক্রমণ থেকে অ্যামিবায়োসিস (অ্যামিবিক ডায়রিয়া) হতে পারে, যা রক্ত আমাশয়ের অন্যতম কারণ।
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানি: দূষিত পানি বা অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ফলে রক্ত আমাশয় হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রতিকার ও করণীয়:

  • পানি ও তরল গ্রহণ: পানিশূন্যতা প্রতিরোধে প্রচুর পানি পান করা উচিত। এছাড়া, ওরস্যালাইন বা ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয়ও গ্রহণ করা যেতে পারে।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং হাত নিয়মিত পরিষ্কার করা রক্ত আমাশয় প্রতিরোধে সহায়ক।
  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: রক্ত আমাশয় হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা উচিত। সংক্রমণের উপর নির্ভর করে অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিপ্রোটোজোয়াল ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।

রক্ত আমাশয় একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা দ্রুত প্রতিকার না করলে বিপজ্জনক হতে পারে। তাই সঠিকভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং কোনো লক্ষণ দেখা দিলে তাড়াতাড়ি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top