নাইটফল বা স্বপ্নদোষ হলো একটি স্বাভাবিক শারীরিক ঘটনা, যা সাধারণত ঘুমের সময় ঘটে। এটি মূলত বয়ঃসন্ধিকালে পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। নাইটফল ঘটে তখন, যখন শরীর যৌন উত্তেজনা বা শারীরিক প্রক্রিয়ার কারণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বীর্যপাত করে। নারীদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে, যাকে “নাইট আর্দ্রতা” বলা হয়, যেখানে ঘুমের মধ্যে যৌন উত্তেজনার কারণে স্রাব হতে পারে।
নাইটফলের কারণ:
নাইটফলের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- স্বপ্নে যৌন চিন্তা: ঘুমের সময় যৌন উত্তেজনামূলক স্বপ্ন দেখার কারণে বীর্যপাত ঘটে।
- বয়ঃসন্ধিকাল: বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে স্বপ্নদোষ হওয়া সাধারণ ঘটনা।
- অতিরিক্ত যৌন চাহিদা: দিনের বেলা যৌন চিন্তা, পর্নোগ্রাফি দেখার অভ্যাস থাকলে এটি রাতে স্বপ্নদোষের রূপ নিতে পারে।
- দীর্ঘ সময় যৌন সংযম: দীর্ঘদিন সহবাস না হলে শরীর থেকে অতিরিক্ত বীর্য বের হয়ে আসে।
- প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া: শরীরে পুরাতন বীর্য সঞ্চিত থাকলে তা স্বাভাবিকভাবে নিঃসৃত হতে পারে।
স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়:
নাইটফল একটি স্বাভাবিক ঘটনা হলেও যদি এটি অতিরিক্ত হয় বা আপনার দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা তৈরি করে, তাহলে কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন:
১. নিয়মিত ব্যায়াম:
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করলে শারীরিক ও মানসিক স্থিতি ভালো থাকে। এতে শরীরের অতিরিক্ত শক্তি খরচ হয়ে যায় এবং রাতে বেশি স্বপ্নদোষ হওয়ার প্রবণতা কমে।
২. যৌন চিন্তা থেকে দূরে থাকুন:
অতিরিক্ত যৌন চিন্তা বা যৌন উত্তেজনামূলক বিষয়বস্তু দেখা বন্ধ করুন। পর্নোগ্রাফি বা অন্যান্য যৌন উত্তেজক উপকরণ থেকে বিরত থাকলে স্বপ্নদোষের প্রবণতা কমতে পারে।
৩. হালকা খাবার খান:
রাতে ঘুমানোর আগে বেশি ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো। হালকা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে রাতের ঘুম ভালো হবে এবং স্বপ্নদোষ কমবে।
৪. মনকে স্থির রাখুন:
মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চা করলে মন শান্ত থাকে এবং যৌন উত্তেজনামূলক চিন্তা কম হয়। এতে করে রাতে বীর্যপাতের আশঙ্কাও কমে।
৫. সঠিক ঘুমের সময়:
নিয়মিত ঘুম এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে শরীরের অতিরিক্ত শক্তি বেরিয়ে আসে এবং রাতে স্বাভাবিক ঘুম হয়।
৬. পর্যাপ্ত জলপান:
সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং শরীরের কার্যকলাপ স্বাভাবিক থাকে। এতে বীর্যপাতের প্রবণতা কমে।
৭. যৌন সংযমের বিকল্প:
আপনার যদি স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত যৌনমিলন করতে না পারেন, তবে বিকল্পভাবে মাস্টারবেশন করতে পারেন, যাতে শরীরে অতিরিক্ত বীর্য সঞ্চিত না হয়।
উপসংহার:
স্বপ্নদোষ বা নাইটফল একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। এটি নিয়ে দুশ্চিন্তা বা ভীতি না রেখে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যদি সমস্যাটি অত্যন্ত গুরুতর মনে হয়, তবে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।