google.com, pub-1016891184419719, DIRECT, f08c47fec0942fa0 অটিজম বাচ্চা খেতে চায় না: কারণ এবং সমাধান - Raju Akon

অটিজম বাচ্চা খেতে চায় না: কারণ এবং সমাধান

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে খাওয়া-দাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা বেশ সাধারণ। অনেক অভিভাবকই অভিযোগ করেন যে তাদের অটিজম বাচ্চারা সঠিকভাবে খেতে চায় না, কিছু নির্দিষ্ট খাবার পছন্দ করে না বা খাওয়ার সময় অস্বাভাবিক আচরণ করে। এটি সাধারণত তাদের সংবেদনশীলতার কারণে হয়, যা খাবারের গন্ধ, স্বাদ, রঙ বা টেক্সচারের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই সমস্যার কারণে শিশুদের পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

কেন অটিজম বাচ্চারা খেতে চায় না?

১. সংবেদনশীলতা: অটিজম আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ইন্দ্রিয় সংবেদনশীলতা অনেক বেশি হতে পারে। তারা খাবারের টেক্সচার, গন্ধ বা স্বাদ নিয়ে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারে, যা তাদের খাওয়ার ইচ্ছাকে বাধাগ্রস্ত করে।

২. নির্বাচনী খাবার পছন্দ: অনেক অটিজম আক্রান্ত শিশু একটি নির্দিষ্ট খাবারেই আটকে থাকতে পারে এবং অন্য কোন খাবার গ্রহণ করতে চায় না। এটি খাদ্যের রঙ, আকার বা একধরনের টেক্সচারের প্রতি নির্দিষ্ট আকর্ষণ বা বিরক্তি হতে পারে।

৩. খাবার নিয়ে রুটিন: কিছু অটিজম শিশুদের জন্য খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট রুটিন এবং পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ। যদি সেই রুটিন পরিবর্তিত হয়, তাহলে তারা খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।

৪. ব্যবহারিক সমস্যা: কিছু অটিস্টিক শিশুদের মুখের পেশি দুর্বল বা মুখের অনুভূতি অত্যন্ত সংবেদনশীল হতে পারে, যা তাদের খাবার চিবানো বা গিলতে সমস্যা করতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

অটিজম বাচ্চাদের খাওয়ার সমস্যা সমাধানের উপায়

১. ধীরে ধীরে নতুন খাবার পরিচিত করুন: নতুন খাবার শিশুদের সামনে আনতে হলে তা ধীরে ধীরে করতে হবে। প্রথমে সামান্য পরিমাণে তাদের প্রিয় খাবারের সাথে মিশিয়ে দিন এবং ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়াতে থাকুন।

২. রুটিন তৈরি করুন: অটিজম শিশুদের জন্য প্রতিদিনের নির্দিষ্ট একটি রুটিনে খাবার পরিবেশন করা কার্যকরী হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট পরিবেশে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করলে তারা স্বস্তিবোধ করতে পারে।

৩. বিভিন্ন টেক্সচার ও রঙের খাবার: অটিজম শিশুদের সংবেদনশীলতা থাকলেও, খাবারের টেক্সচার ও রঙ পরিবর্তন করে মজা তৈরি করা যেতে পারে। তাদের পছন্দ অনুযায়ী নরম বা ক্রিস্পি খাবার নির্বাচন করা যেতে পারে।

৪. ভালোভাবে প্রস্তুত করা খাবার: শিশুদের জন্য খাবার তৈরিতে যতটা সম্ভব সৃজনশীল হতে হবে। তাদের পছন্দ অনুযায়ী খাবারের আকৃতি বা রঙ পরিবর্তন করে তা আরো আকর্ষণীয় করা যেতে পারে।

৫. খাবার পরিবেশন করুন ছোট ছোট অংশে: অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য বড় পরিমাণ খাবার দেখালে তারা ভীত হতে পারে। তাই ছোট ছোট অংশে খাবার পরিবেশন করলে তাদের খাওয়ার আগ্রহ বাড়তে পারে।

৬. অনুকরণ শিখান: অনেক সময় অটিজম শিশুরা অন্যদের অনুকরণ করে খাবার খেতে শিখতে পারে। পরিবারের সদস্যদের সামনে খাওয়ার মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করা যেতে পারে।

৭. পুরস্কার পদ্ধতি: নতুন খাবার খাওয়ানোর পরে শিশুকে কোনো পছন্দের পুরস্কার বা প্রশংসা দেওয়া যেতে পারে, যা তাদের আগ্রহ বাড়াতে সহায়ক হবে।

পুষ্টির ঘাটতি পূরণে করণীয়

যদি শিশু কোন নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণ করতে না চায় এবং তার ফলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়, তবে অভিভাবকদের উচিত পুষ্টিবিদ বা ডাক্তারদের সাথে পরামর্শ করা। শিশুদের জন্য উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের পরিবর্তে পুষ্টি পরিপূরক গ্রহণের পরামর্শও দেওয়া হতে পারে।

উপসংহার

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের খাওয়া-দাওয়ার সমস্যাগুলি অভিভাবকদের জন্য অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তবে সঠিক ধৈর্য এবং কৌশলের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি ধীরে ধীরে সমাধান করা যায়। নতুন খাবারের সাথে পরিচয় করানো, রুটিন মেনে চলা এবং শিশুদের পছন্দের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top