google.com, pub-1016891184419719, DIRECT, f08c47fec0942fa0 মানসিক রোগীরা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয় কেন? - Raju Akon

মানসিক রোগীরা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয় কেন?

মানসিক রোগের চিকিৎসায় ঔষধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অনেক মানসিক রোগী তাদের নির্ধারিত ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়, যা তাদের সুস্থতা এবং চিকিৎসার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব কেন মানসিক রোগীরা ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে এবং এই সমস্যার সমাধান কী হতে পারে।

ঔষধ খাওয়া বন্ধ করার কারণসমূহ

  1. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
    • অনেক মানসিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে, যেমন ওজন বৃদ্ধি, ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি রোগীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি এবং অস্বস্তির সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে তারা ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়।

      raju akon youtube channel subscribtion

  2. লক্ষণগুলির উন্নতি:
    • অনেক সময় রোগীরা ঔষধ খেয়ে কিছুটা সুস্থ অনুভব করার পর মনে করেন তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছেন এবং ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। এটি একটি ভুল ধারণা, কারণ চিকিৎসার সম্পূর্ণ কোর্স শেষ না করলে রোগের পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
  3. ঔষধের প্রভাব সম্পর্কে ভুল ধারণা:
    • কিছু রোগী মনে করেন যে ঔষধ তাদের ব্যক্তিত্ব বা চিন্তা পরিবর্তন করছে। তারা বিশ্বাস করেন যে ঔষধ খেলে তারা নিজেরাই থাকবে না, তাই ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেন।
  4. আর্থিক সমস্যা:
    • মানসিক ঔষধ অনেক সময় ব্যয়বহুল হতে পারে। আর্থিক সমস্যার কারণে অনেক রোগী ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেন।
  5. সামাজিক স্টিগমা:
    • মানসিক রোগ এবং এর চিকিৎসা নিয়ে সমাজে অনেক সময় নেতিবাচক ধারণা থাকে। এই কারণে রোগীরা ঔষধ খাওয়া গোপন রাখতে চান এবং মাঝে মাঝে ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেন।
  6. সমর্থনের অভাব:
    • রোগীর পরিবার বা প্রিয়জনের সমর্থন এবং উৎসাহের অভাবে অনেক সময় রোগীরা ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেন।

সমস্যার সমাধান

  1. সঠিক তথ্য প্রদান:
    • রোগী এবং তাদের পরিবারের জন্য সঠিক তথ্য এবং শিক্ষা প্রদান করা জরুরি। ঔষধের প্রয়োজনীয়তা এবং এর প্রভাব সম্পর্কে তাদের সচেতন করা উচিত।
  2. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাপনা:
    • ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে চিকিৎসককে জানানো উচিত এবং সম্ভব হলে অন্য ঔষধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত।
  3. নিয়মিত মনিটরিং:
    • নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং মনিটরিং করা উচিত যাতে রোগী ঔষধ খাওয়া নিয়মিতভাবে বজায় রাখতে পারে।
  4. আর্থিক সহায়তা:
    • আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন রোগীদের জন্য বিভিন্ন সামাজিক বা সরকারি সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।
  5. সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন:
    • মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং সামাজিক স্টিগমা দূর করার জন্য বিভিন্ন প্রচারণা এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।
  6. পরিবারের সমর্থন:
    • পরিবারের সমর্থন এবং উৎসাহ মানসিক রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবারকে শিক্ষিত করা উচিত কিভাবে তারা রোগীকে সহায়তা করতে পারে।

উপসংহার

মানসিক রোগীরা বিভিন্ন কারণে ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়, যা তাদের চিকিৎসার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। সঠিক তথ্য, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাপনা, নিয়মিত মনিটরিং, আর্থিক সহায়তা, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবারের সমর্থনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। সঠিক চিকিৎসা এবং সমর্থনের মাধ্যমে মানসিক রোগীরা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।

Writer:
Raju Akon, MPhil-DU, Counselling Psychologist at PMHCC

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top