৬ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয়

৬ মাসের শিশুর জ্বর হওয়া সাধারণ ঘটনা, তবে অভিভাবকদের জন্য এটি উদ্বেগজনক হতে পারে। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ হল তার শরীরে কোনো সংক্রমণ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়া কাজ করছে। শিশুর জ্বর হলে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে শিশুটি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে এবং জ্বরের কারণে কোনো জটিলতা না হয়।

শিশুর জ্বরের কারণসমূহ

১. সংক্রমণ

শিশুর জ্বরের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো সংক্রমণ। এটি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাংগাসের সংক্রমণের কারণে হতে পারে। সাধারণ ঠান্ডা, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা কান, গলা এবং প্রস্রাবের সংক্রমণ জ্বরের কারণ হতে পারে।

২. টীকা দেওয়ার পর প্রতিক্রিয়া

অনেক সময় টীকা দেওয়ার পর শিশুর সামান্য জ্বর আসতে পারে। এটি সাধারণত টীকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘটে এবং অল্প সময়ের মধ্যে সেরে যায়।

৩. দাঁত ওঠার সময়

দাঁত ওঠার সময় কিছু বাচ্চার সামান্য জ্বর হতে পারে। এটি সাধারণত কোনো গুরুতর সমস্যা নয়।

৪. সাধারণ ঠান্ডা বা ফ্লু

৬ মাস বয়সের শিশুরা সাধারণ ঠান্ডা বা ফ্লুতে আক্রান্ত হলে তাদের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

শিশুর জ্বরের লক্ষণ

  • শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি।
  • শিশুর শরীরে উত্তাপ অনুভব করা।
  • খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাওয়া।
  • বেশি কান্না বা বিরক্তি।
  • দুর্বলতা বা অলসতা।
  • ঘুমের সমস্যা।

৬ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয়

১. শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন

জ্বর হলে শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে। শিশুর শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তাই বিশ্রাম নেওয়া তার শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

২. প্রচুর তরল খাওয়ান

শিশুকে পর্যাপ্ত তরল যেমন বুকের দুধ বা গরম পানীয় খাওয়াতে হবে। জ্বরের কারণে শরীর থেকে পানি কমে যেতে পারে, তাই তরল খাদ্য গ্রহণ তার শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ করতে সাহায্য করে।

৩. প্যারাসিটামল ব্যবহার করুন

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুকে প্যারাসিটামল দিতে পারেন। এটি জ্বর কমাতে সাহায্য করে এবং শিশুর ব্যথা উপশম করে। ডোজ এবং ব্যবহারের পরিমাণ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দিতে হবে।

৪. গরম পানি দিয়ে মুছে দিন

শিশুর জ্বর কমাতে হালকা গরম পানি দিয়ে তার শরীর মুছে দিতে পারেন। এটি তাপমাত্রা কমাতে সহায়ক হয়।

৫. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

যদি শিশুর জ্বর ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, বা শিশুর সাথে বমি, ডায়রিয়া, খিঁচুনি বা অন্য কোনো গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৬. শিশুর শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করুন

নিয়মিতভাবে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করুন। তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন এবং চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

শিশুর জ্বর হলে যা করবেন না

  • শিশুকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাবেন না, কারণ এটি তাপমাত্রা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ দেবেন না।
  • গরম কাপড় বা চাদরে শিশুকে জড়াবেন না, এটি তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

৬ মাসের শিশুর জ্বর হলে তৎক্ষণাৎ সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা এবং অন্যান্য উপসর্গের ওপর নিয়মিত নজর রাখতে হবে। জ্বরের প্রকৃত কারণ এবং এর চিকিৎসা জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করলে শিশুটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top