নবজাতকের যত্ন নেওয়া একটি বড় দায়িত্ব, বিশেষ করে যখন তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। অনেক বাবা-মা লক্ষ্য করেন যে ১ মাসের বাচ্চার পায়খানা হচ্ছে না, যা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। তবে, এটি সবসময়ই গুরুতর কিছু বোঝায় না। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করবো ১ মাসের শিশুর পায়খানা না হওয়ার কারণ, স্বাভাবিকতা নির্ধারণের উপায়, এবং কীভাবে এটি মোকাবিলা করা যায়।
১ মাসের শিশুর পায়খানা না হওয়ার কারণ
১. মাতৃদুগ্ধের পরিপূর্ণ শোষণ:
- শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করা শিশুরা অনেক সময় দিনে একবার বা কয়েকদিন পরপর পায়খানা করতে পারে।
- মায়ের দুধ সহজেই হজম হয়ে যায়, তাই কিছু শিশুর পায়খানার প্রয়োজন কম হয়।

- অতিরিক্ত গরম বা পানিশূন্যতা:
- গরম আবহাওয়ায় শিশুর শরীর পানিশূন্য হতে পারে, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।
- অপর্যাপ্ত খাওয়া:
- পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ না খেলে শিশুর হজমক্রিয়া ধীর হয়ে যেতে পারে, ফলে পায়খানার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অন্ত্রের ক্রিয়াকলাপের ধীরগতি:
- কিছু শিশুর অন্ত্র স্বাভাবিকের তুলনায় ধীরগতিতে কাজ করে, যা পায়খানার সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে।
কখন চিন্তার কারণ হতে পারে?
১. শিশুর পেট ফুলে গেছে বা খুব শক্ত অনুভূত হচ্ছে। 2. শিশুটি বিরক্ত, কান্নাকাটি করছে, বা খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। 3. পায়খানা করলে তা খুব শক্ত বা পাথরের মতো হচ্ছে। 4. শিশুর পায়খানার রঙ অস্বাভাবিক (যেমন কালো, সাদা, বা রক্তযুক্ত)।
করণীয়
১. শিশুকে বেশি বেশি দুধ খাওয়ানো
- বুকের দুধে প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ থাকে যা শিশুর হজমে সাহায্য করে।
- যদি শিশুকে ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো হয়, তবে ফর্মুলার ধরন পরিবর্তন করা যেতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।
২. হালকা মালিশ করা
- শিশুর পেটে গোলাকারে হালকা ম্যাসাজ করলে অন্ত্রের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- শিশুর পায়ের ব্যায়াম করানো যেতে পারে (সাইকেল চালানোর মতো করে পা নাড়ানো)।
৩. গরম পানিতে গোসল করানো
- উষ্ণ পানি শিশুর পেশি শিথিল করে, যা অন্ত্রের ক্রিয়াকে সক্রিয় করতে পারে।
৪. চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
- যদি ৫-৭ দিনের মধ্যে শিশুর পায়খানা না হয় এবং সে অস্বস্তি বোধ করে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
- কোন ওষুধ বা বাড়িতে তৈরি উপায় ব্যবহারের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
উপসংহার
১ মাসের শিশুর পায়খানা না হওয়া সব সময় উদ্বেগের কারণ নয়, তবে কিছু লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। পর্যাপ্ত দুধ খাওয়ানো, হালকা ব্যায়াম, এবং যত্নশীল মনোযোগ শিশুর অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।