গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের সঠিক পরিমাপ এবং নিয়ন্ত্রণ গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা না গেলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন প্রি-এক্লাম্পসিয়া, যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। সাধারণত, গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের স্বাভাবিক মান এবং কীভাবে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় তা জানলে গর্ভাবস্থার স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো যায়।
গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক রক্তচাপের পরিমাপ
গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক রক্তচাপের মান সাধারণত অন্যান্য সময়ের মতোই থাকে, অর্থাৎ:
- সিস্টোলিক (উচ্চ চাপ): ১১০ থেকে ১২০ mmHg
- ডায়াস্টোলিক (নিম্ন চাপ): ৭০ থেকে ৮০ mmHg
সাধারণত, গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ ১২০/৮০ mmHg এর আশেপাশে থাকলে তা স্বাভাবিক বলে গণ্য করা হয়। তবে কিছু মহিলার ক্ষেত্রে রক্তচাপ কিছুটা ওঠানামা করতে পারে। এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের সমস্যা এবং এর লক্ষণ
গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাকে গর্ভকালীন হাইপারটেনশন বা প্রি-এক্লাম্পসিয়া বলা হয়। এটি একটি গুরুতর অবস্থা যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি গর্ভবতী নারীর রক্তচাপ ১৪০/৯০ mmHg এর বেশি হয়, তবে তা গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের সংকেত হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
গর্ভবতী নারীদের উচ্চ রক্তচাপ হলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন:
- মাথা ঘোরা
- চোখের সামনে ঝাপসা দেখা
- বমি বমি ভাব
- মাথাব্যথা
- পায়ে ফোলাভাব বা হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি
- পেটের ব্যথা
এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস
- কম লবণ গ্রহণ করা: বেশি লবণ রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
- পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: শাকসবজি এবং ফলমূল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- বেশি জল পান করা: শরীর হাইড্রেটেড থাকলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম
গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ কমানোও গুরুত্বপূর্ণ।
৩. ব্যায়াম করা
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। হাঁটা, যোগব্যায়াম এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম উপকারী।
৪. নিয়মিত চেকআপ করা
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিত। চিকিৎসক আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ দিতে পারবেন।
গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। স্বাভাবিক রক্তচাপের সীমার মধ্যে থাকলে গর্ভকালীন জটিলতার সম্ভাবনা কমে। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা এবং মানসিক চাপ কমানো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। যদি উচ্চ রক্তচাপের কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।