কিডনিতে সিস্ট (Cyst) হলো একটি গোলাকার, তরলভর্তি থলি যা কিডনির ভেতরে বা উপরে তৈরি হতে পারে। সাধারণত কিডনির সিস্ট ক্ষতিকারক হয় না এবং অনেক সময় কোনো লক্ষণও দেখা যায় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে কিডনির সিস্ট গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
কিডনিতে সিস্টের কারণে সৃষ্ট সমস্যা:
- কিডনি ব্যথা:
- বড় বা সংখ্যায় বেশি সিস্ট থাকলে কিডনিতে চাপ পড়ে, যার ফলে পিঠের নিচের দিকে বা পাঁজরের নিচে ব্যথা হতে পারে।
- মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI):
- সিস্ট বড় হলে বা কিডনির কার্যক্রম ব্যাহত হলে মূত্রনালীতে সংক্রমণ হতে পারে। এর ফলে বারবার মূত্রত্যাগের প্রবণতা, জ্বালা, এবং পিঠে ব্যথা দেখা দিতে পারে।
- রক্তচাপ বৃদ্ধি:
- সিস্টের কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘমেয়াদে হার্ট এবং কিডনির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- কিডনি ফাংশনে সমস্যা:
- বড় সিস্ট কিডনির টিস্যু এবং নালীগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে কিডনি সঠিকভাবে ফিল্টারিং করতে পারে না। এতে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।
- রক্তবাহী কিডনি:
- কিছু ক্ষেত্রে কিডনির সিস্ট ভেঙে রক্তপাত হতে পারে। এর ফলে প্রস্রাবের সাথে রক্ত দেখা যেতে পারে এবং ব্যথা হতে পারে।
- কিডনি ফেইলিউর:
- খুব বড় বা সংখ্যায় বেশি সিস্ট থাকলে কিডনির কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে, যা কিডনি ফেইলিউরের কারণ হতে পারে। এটি কিডনির কার্যক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট করে দিতে পারে।
- পানি জমে যাওয়া (Hydronephrosis):
কিডনির সিস্টের লক্ষণ:
- পিঠের নিচের দিকে ব্যথা
- প্রস্রাবে রক্ত দেখা
- বমি বমি ভাব বা বমি
- মূত্রনালীর সংক্রমণ
- মূত্রত্যাগে ব্যথা বা অস্বস্তি
- উচ্চ রক্তচাপ
চিকিৎসা ও প্রতিকার:
- নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: অনেক সময় ছোট সিস্ট নিজে থেকে ঠিক হয়ে যায়, তবে নিয়মিত চেকআপ করে ডাক্তারকে জানানো উচিত।
- ওষুধ: ব্যথা বা সংক্রমণ হলে ডাক্তার সাধারণত ব্যথানাশক ও এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে থাকেন।
- সিস্ট সেভ করা: বড় সিস্ট হলে ও তা কিডনির কার্যক্ষমতা বা স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেললে, ডাক্তার সিস্ট অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন।
- অপারেশন: গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে, যেখানে সিস্ট অপসারণ করা হয়।
কিডনিতে সিস্ট সাধারণত বড় সমস্যা সৃষ্টি না করলেও, বড় সিস্ট বা সংখ্যায় বেশি হলে তা কিডনির কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।