WHO-এর মতে স্বাস্থ্য কি? স্বাস্থ্য সংজ্ঞা, গুরুত্ব এবং আমাদের করণীয়

স্বাস্থ্য মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। কিন্তু স্বাস্থ্য বলতে আমরা কী বুঝি? শুধুমাত্র রোগমুক্ত থাকাই কি স্বাস্থ্য? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতে, স্বাস্থ্য একটি বহুমাত্রিক ধারণা। আজকের ব্লগে আমরা জানব WHO-এর মতে স্বাস্থ্য কী, এর সংজ্ঞা এবং কেন এটি আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ।

WHO-এর মতে স্বাস্থ্য কী?

WHO ১৯৪৮ সালে স্বাস্থ্যকে একটি সমন্বিত এবং বিস্তৃত দৃষ্টিকোণ থেকে সংজ্ঞায়িত করেছে। সংস্থাটির মতে,
“স্বাস্থ্য মানে শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয়, বরং এটি শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক কল্যাণের একটি পূর্ণাঙ্গ অবস্থা।”
এই সংজ্ঞা স্বাস্থ্যকে একটি পূর্ণাঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করে, যেখানে শারীরিক, মানসিক, এবং সামাজিক কল্যাণ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।raju akon youtube channel subscribtion

স্বাস্থ্য সংজ্ঞার মূল উপাদান:

  1. শারীরিক স্বাস্থ্য
    শরীর সুস্থ থাকা এবং কোনো রোগ বা দুর্বলতা না থাকা।
    উদাহরণ: নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ।

  2. মানসিক স্বাস্থ্য
    মনের স্থিতি এবং চিন্তাশক্তির সুস্থতা। মানসিক চাপ বা হতাশা থেকে মুক্ত থাকা।
    উদাহরণ: মেডিটেশন, মানসিক সমর্থন।

  3. সামাজিক স্বাস্থ্য
    সমাজের সাথে সুসম্পর্ক এবং সুষ্ঠু যোগাযোগ বজায় রাখা।
    উদাহরণ: পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক।

কেন স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ?

স্বাস্থ্য শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বিষয় নয়; এটি একটি সমাজ এবং জাতির সামগ্রিক উন্নয়নের ভিত্তি।

পরিসংখ্যান এবং উদাহরণ

  • WHO-এর মতে, প্রতিবছর প্রায় ৭০% মৃত্যুর কারণ হলো জীবনধারা-সংক্রান্ত অসুস্থতা, যেমন: ডায়াবেটিস, হৃদরোগ।
  • বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনের ৬ জন মানসিক চাপের কারণে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন।

স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য করণীয়

  1. পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা।
  2. সুষম খাদ্য গ্রহণ: ভিটামিন, প্রোটিন, এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ।
  3. ব্যায়াম: সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শারীরিক কার্যক্রম।
  4. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন: মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা।
  5. সামাজিক সম্পর্ক: পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

স্বাস্থ্য সম্পর্কে ভুল ধারণা

আমাদের সমাজে অনেকেই স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা পোষণ করেন।

সাধারণ ভুল ধারণাগুলো:

  1. “রোগ না থাকলেই স্বাস্থ্য ভালো।”
  2. “শুধু পুষ্টিকর খাবার খেলেই স্বাস্থ্য ভালো হবে।”
    সত্য হলো, একটি সুস্থ জীবনযাপনের জন্য শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক তিনটি দিকেই ভারসাম্য আনতে হবে।

উপসংহার

স্বাস্থ্য একটি সম্পদ এবং এটি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। WHO-এর মতে, স্বাস্থ্য কেবল শারীরিক সুস্থতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি মানসিক এবং সামাজিক কল্যাণের সাথেও সম্পর্কিত। আসুন, আমরা সবাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করি এবং আমাদের চারপাশের মানুষকেও উদ্বুদ্ধ করি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top