google.com, pub-1016891184419719, DIRECT, f08c47fec0942fa0 অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) কি? - Raju Akon

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) কি?

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) হলো একটি মানসিক বিকাশগত সমস্যা, যা শিশুর সামাজিক যোগাযোগ, আচরণ এবং ভাষাগত দক্ষতার উপর প্রভাব ফেলে। অটিজমের লক্ষণ এবং তীব্রতা একেকজনের মধ্যে একেক রকম হতে পারে, যা এই বিকাশগত সমস্যাকে “স্পেকট্রাম” আকারে চিন্তা করা হয়। এই অবস্থা ছোটবেলায় শুরু হয় এবং শিশুর সারাজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের লক্ষণ

ASD-এর প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  1. সামাজিক যোগাযোগের সমস্যা: ASD আক্রান্ত শিশুদের জন্য সামাজিক সম্পর্ক তৈরি এবং বজায় রাখা কঠিন হতে পারে। তারা চোখের যোগাযোগ এড়ায়, কথা বলার সময় শরীরের ভাষা ব্যবহার করে না বা বুঝতে পারে না।
  2. আচরণগত সীমাবদ্ধতা এবং পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ: অনেক শিশুই নির্দিষ্ট কাজ বারবার করে, যেমন হাত দোলানো, ঘোরানো বা একই প্রশ্ন বারবার করা। তারা নির্দিষ্ট রুটিন পছন্দ করে এবং পরিবর্তন মেনে নিতে কষ্ট হয়।
  3. বাচন বা ভাষাগত সমস্যা: ASD শিশুরা প্রায়ই দেরিতে কথা বলা শুরু করে বা একেবারেই কথা বলে না। কিছু শিশু নির্দিষ্ট শব্দ বা বাক্যাংশ পুনরাবৃত্তি করতে পছন্দ করে, যা এক ধরনের “ইকোলালিয়া” নামে পরিচিত।
  4. সংবেদনশীলতা: ASD আক্রান্তরা নির্দিষ্ট ধরনের আলো, শব্দ, বা স্পর্শে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হতে পারে। কখনও কখনও তাদের নির্দিষ্ট ধরণের কাপড় পরতে বা কিছু খাবার খেতে অস্বস্তি হতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের কারণ

ASD-এর নির্দিষ্ট কারণ এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ বিবেচনা করা হয়:

  • জিনগত প্রভাব: ASD-এর অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক জিনগত সংযোগ পাওয়া যায়। কিছু নির্দিষ্ট জিনের পরিবর্তন অটিজমের সঙ্গে যুক্ত।
  • পরিবেশগত কারণ: গর্ভাবস্থায় মায়ের স্বাস্থ্য, ভাইরাস সংক্রমণ বা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অটিজমের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা

ASD এর নিরাময় সম্ভব না হলেও বিভিন্ন থেরাপি এবং চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুর মানসিক এবং সামাজিক দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব। কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি হলো:

  1. অ্যাপ্লাইড বিহেভিয়ারাল অ্যানালিসিস (ABA): এটি একটি কার্যকর থেরাপি যা শিশুর ইতিবাচক আচরণ বাড়াতে এবং নেতিবাচক আচরণ হ্রাস করতে সহায়ক।
  2. অকুপেশনাল থেরাপি: ASD আক্রান্ত শিশুর দৈনন্দিন কার্যক্রমে স্বাধীনতা আনতে এই থেরাপি কার্যকর। এটি তাদের মোটর স্কিল এবং ইন্দ্রিয়গত সংবেদনশীলতা উন্নত করে।
  3. স্পিচ থেরাপি: ASD শিশুর কথা বলা এবং ভাষাগত দক্ষতা বাড়াতে স্পিচ থেরাপি সহায়ক। এটি তাদের যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ায়।
  4. ওষুধ: কিছু ASD শিশুর আচরণগত সমস্যার জন্য ডাক্তার ওষুধ প্রদান করতে পারে, যেমন হাইপারঅ্যাক্টিভিটি, উদ্বেগ বা ঘুমের সমস্যা।

ASD নিয়ে ধারণা ও সচেতনতা

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। তবে সচেতনতা বাড়ানো এবং সঠিক তথ্য প্রচার করার মাধ্যমে ASD আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে সঠিকভাবে আচরণ করা সম্ভব। সামাজিক সমর্থন এবং শিক্ষার মাধ্যমে অটিজম আক্রান্তরা সমাজের মূলধারায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়।

উপসংহার

অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) একটি দীর্ঘমেয়াদী বিকাশগত সমস্যা, কিন্তু সময়মত সঠিক থেরাপি এবং সহায়ক পদ্ধতির মাধ্যমে ASD আক্রান্ত শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারে। পরিবার এবং সমাজের সমর্থনই ASD আক্রান্ত শিশুদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top