খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে কী হয়:

খাদ্যনালী মানুষের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা খাদ্য এবং তরলকে গলাধঃকরণের পর পাকস্থলীতে পৌঁছে দেয়। তবে বিভিন্ন কারণে খাদ্যনালী শুকিয়ে যেতে পারে, যা গুরুতর শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত খাদ্যনালীতে প্রদাহ বা রক্ত সঞ্চালনের সমস্যার কারণে হয়।

খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে সাধারণ লক্ষণ:

১. গলায় খুসখুস ভাব:

  • খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে গলায় খুসখুস বা অস্বস্তি অনুভব হতে পারে। এটি ধীরে ধীরে আরও বিরক্তিকর হতে পারে, যা খাওয়া বা পান করা কঠিন করে তোলে।

২. খাবার গিলতে অসুবিধা:

  • খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে খাদ্য গলধঃকরণে অসুবিধা হতে পারে। এমনকি ছোট ছোট খাবারও গলাধঃকরণে সমস্যা হতে পারে।

৩. গলা জ্বলা বা পেটে অস্বস্তি:

  • খাদ্যনালী শুকিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক সময় গলা এবং পেটে জ্বালা হতে পারে। এতে খাদ্য হজমে সমস্যা হয় এবং পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে।

৪. শুষ্ক কাশি:

  • খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে দীর্ঘস্থায়ী শুষ্ক কাশি হতে পারে। এটি বিশেষ করে রাতে বা শুয়ে থাকার সময় বেশি হয়।

৫. ওজন কমে যাওয়া:

  • খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে খাবার গলাধঃকরণে সমস্যা হওয়ার কারণে খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে।

৬. শ্বাসকষ্ট:

  • খাদ্যনালীর শুষ্কতা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এটি ফুসফুসের সাথে খাদ্যনালীর ঘনিষ্ঠ সংযোগের কারণে ঘটে।

খাদ্যনালী শুকিয়ে যাওয়ার কারণ:

১. ডিহাইড্রেশন:

  • শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে খাদ্যনালী শুকিয়ে যেতে পারে। ডিহাইড্রেশন খাদ্যনালীতে শুষ্কতা সৃষ্টি করে এবং খাদ্য গলাধঃকরণে সমস্যা দেখা দেয়।

২. গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD):

  • GERD হলে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে উঠতে পারে, যা খাদ্যনালীতে প্রদাহ ও শুষ্কতা তৈরি করে।

৩. রেডিয়েশন থেরাপি:

  • ক্যান্সার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপির কারণে খাদ্যনালী শুকিয়ে যেতে পারে। এটি খাদ্যনালীর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট করতে পারে।

৪. সংক্রমণ বা প্রদাহ:

  • খাদ্যনালীতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বা প্রদাহ দেখা দিলে খাদ্যনালী শুকিয়ে যেতে পারে।

খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে করণীয়:

১. পানি ও তরল গ্রহণ:

  • খাদ্যনালীর শুষ্কতা এড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি ও তরল গ্রহণ করা জরুরি। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

২. মশলাযুক্ত খাবার এড়ানো:

  • মশলাযুক্ত খাবার খাদ্যনালীর জ্বালা ও শুষ্কতা বাড়াতে পারে। তাই মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

৩. ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া:

  • যদি খাদ্যনালী শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ বা চিকিৎসা দিতে পারেন।

৪. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ:

  • শাকসবজি ও সুষম খাবার খাদ্যনালীর স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। তাই সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

৫. রেডিয়েশন থেরাপি পরবর্তী যত্ন:

  • যদি রেডিয়েশন থেরাপির কারণে খাদ্যনালী শুকিয়ে যায়, তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে অবহিত করা উচিত। এ ধরনের সমস্যায় বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।

    raju akon youtube channel subscribtion

সতর্কতা:

খাদ্যনালী শুকিয়ে গেলে দেহের বিভিন্ন অংশে প্রভাব পড়তে পারে, তাই কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top