বাইপোলার ঔষধ মিস করলে কি হয়?

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো দীর্ঘস্থায়ী মানসিক অবস্থার চিকিৎসায় ওষুধের সঠিক ডোজ এবং নিয়মিত ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। যদি কোনো কারণে ওষুধের একটি ডোজ মিস হয়ে যায়, তা রোগীর মুড এবং স্বাস্থ্য উভয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে বাইপোলার ঔষধ মিস করলে কী কী সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. রিল্যাপস বা পুনরাবৃত্তি ঝুঁকি

ওষুধ মিস করার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো রিল্যাপস বা পূর্বের উপসর্গগুলির পুনরাবৃত্তি। বাইপোলার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রতিদিন ওষুধ সেবন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ওষুধগুলি ম্যানিয়া এবং ডিপ্রেশন উভয় পর্ব নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।

  • ম্যানিয়া: একটি বা একাধিক ডোজ মিস করলে ম্যানিয়া পর্বের উপসর্গগুলি ফিরে আসতে পারে। এর ফলে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস, উত্তেজনা, এবং ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ দেখা দিতে পারে।
  • ডিপ্রেশন: ডিপ্রেশন পর্বের লক্ষণগুলি যেমন মনমরা ভাব, অবসাদ, এবং আত্মহত্যার চিন্তা বেড়ে যেতে পারে যদি ওষুধ নিয়মিত সেবন না করা হয়।

raju akon youtube channel subscribtion

২. সাইকোসিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি

ওষুধ মিস করার কারণে মুডের অস্থিতিশীলতা সাইকোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। সাইকোসিস রোগীকে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে এবং বিভ্রান্তিকর চিন্তা ও বিশ্বাসে আচ্ছন্ন করে তোলে। এটি একটি জরুরি অবস্থা, যার জন্য তাত্ক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন।

৩. অসন্তুষ্টি এবং অস্থিরতা

ওষুধ মিস করার পর অনেকেই অতিরিক্ত অস্থিরতা এবং অসন্তুষ্টি অনুভব করতে পারেন। এটি মুড সুইংয়ের কারণ হতে পারে এবং দৈনন্দিন জীবনে স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত করতে পারে।

৪. শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে, একটি বা একাধিক ডোজ মিস করলে শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন:

  • মাথাব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • ঘুমের সমস্যা
  • ঝিমঝিম ভাব

৫. চিকিৎসার কার্যকারিতা হ্রাস

নিয়মিতভাবে ওষুধ না খেলে চিকিৎসার কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। এমনকি, মিস করা ডোজগুলি পরবর্তী ওষুধের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং রোগীর স্বাস্থ্য অবনতি ঘটতে পারে।

৬. আস্থা হারানোর ঝুঁকি

যদি কেউ বারবার ওষুধ মিস করেন, তাহলে চিকিৎসার প্রতি তার আস্থা কমে যেতে পারে। এ কারণে রোগী চিকিৎসার প্রক্রিয়ায় আগ্রহ হারাতে পারেন, যা তার রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বড় বাধা হতে পারে।

উপসংহার

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ওষুধ মিস করা রোগীর জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এটি রিল্যাপস, সাইকোসিস, এবং অন্যান্য মানসিক ও শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই, রোগীদের প্রতিদিন ওষুধ গ্রহণের গুরুত্ব বুঝতে হবে এবং কোনো ডোজ মিস হলে যত দ্রুত সম্ভব তা গ্রহণ করা উচিত। যদি একাধিক ডোজ মিস হয়ে যায়, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন যাতে রোগীর মুড এবং স্বাস্থ্যের অবনতি না ঘটে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top