কানের পর্দা, যা টিম্পানিক মেমব্রেন নামে পরিচিত, কানের ভেতরের অংশের একটি পাতলা ঝিল্লি। এটি বাহ্যিক শব্দ তরঙ্গ গ্রহণ করে এবং তা ভিতরের কানের হাড়ের মাধ্যমে প্রসারিত করে শ্রবণের প্রক্রিয়া শুরু করে। কোনো কারণে কানের পর্দা ফেটে গেলে, অনেকেই ভাবেন এটি কি আবার জোড়া লাগে? এই প্রশ্নের উত্তর নিচে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
কানের পর্দা ফাটার কারণ:
কানের পর্দা বিভিন্ন কারণে ফেটে যেতে পারে, যেমন:
- ইনফেকশন: কানের ইনফেকশন, বিশেষ করে মিডল ইয়ার ইনফেকশন (otitis media) কানের পর্দা ফাটাতে পারে।
- আঘাত: মাথায় আঘাত লাগলে বা কান পরিষ্কারের সময় অতিরিক্ত চাপ লাগলে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- জোরে শব্দ: অতিরিক্ত উচ্চ শব্দ যেমন বিস্ফোরণ বা গান বাজানো কানের পর্দা ফাটাতে পারে।
- আচমকা চাপ পরিবর্তন: গভীর পানিতে ডাইভিং করা বা বিমানে ওঠানামার সময় কানের চাপ হঠাৎ পরিবর্তিত হলে পর্দা ফেটে যেতে পারে।
কানের পর্দা কি জোড়া লাগে?
হ্যাঁ, কানের পর্দা ফেটে গেলে তা সাধারণত নিজে নিজেই নিরাময় হতে পারে। তবে এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ এবং কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। সাধারণত, ছোটখাটো ছিদ্র বা ক্ষত প্রায় ২-৩ মাসের মধ্যে নিজে থেকেই নিরাময় হয়।
কখন চিকিৎসার প্রয়োজন:
যদি কানের পর্দার ছিদ্র বড় হয় বা নিরাময় না হয়, তাহলে ডাক্তার বিশেষ ধরনের চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিতে পারেন। কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি হলো:
- অ্যান্টিবায়োটিক: যদি ইনফেকশন থেকে কানের পর্দা ফাটে, তাহলে ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে পারেন।
- প্যাচিং (Patching): যদি কানের পর্দা নিজে নিজে জোড়া না লাগে, তাহলে ডাক্তার কানের পর্দার উপর বিশেষ ধরনের প্যাচ লাগাতে পারেন।
- টিম্পানোপ্লাস্টি (Tympanoplasty): যদি ছিদ্র বড় হয় বা দীর্ঘদিনেও ভালো না হয়, তাহলে টিম্পানোপ্লাস্টি নামে একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। এতে কানের পর্দা নতুন করে পুনর্গঠন করা হয়।
কানের পর্দা ফাটা প্রতিরোধের উপায়:
- কানে কোনো ধারালো বস্তু ব্যবহার করবেন না।
- অতিরিক্ত উচ্চ শব্দ থেকে কানকে সুরক্ষিত রাখুন।
- কানের ইনফেকশন হলে চিকিৎসা নিতে দেরি করবেন না।
- আচমকা চাপ পরিবর্তন হলে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
কানের পর্দা ফেটে গেলে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজে থেকেই জোড়া লাগে। তবে কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। কানের সুরক্ষা ও যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কানে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।