সঠিকভাবে ধুবো হাত, রোগবালাই দূরে থাক

সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এটি শুধু নিজের সুস্থতার জন্য নয়, বরং অন্যান্যদেরও রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে হাত ধুলে অনেক ধরনের সংক্রমণ এবং রোগবালাই থেকে বাঁচা যায়, যেমন সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, ফ্লু, টাইফয়েড, ইত্যাদি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার এই বিষয়টির ওপর জোর দেন যে, হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম মেনে চললে অসংখ্য জীবাণু এবং ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

কখন হাত ধোয়া উচিত:

১. খাবার খাওয়ার আগে ও পরে: খাবার খাওয়ার সময় হাতে জীবাণু থাকলে তা সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।

২. বাথরুম ব্যবহারের পরে: বাথরুম ব্যবহারের পর হাতে জীবাণু থাকতে পারে, যা হাতের মাধ্যমে মুখ, চোখ, নাক ইত্যাদিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

৩. বাইরের কাজ শেষে: বাইরে থেকে বাসায় ফেরার পর অবিলম্বে হাত ধোয়া উচিত, কারণ বাইরের বাতাসে ও বিভিন্ন জায়গায় জীবাণু থাকতে পারে।

৪. হাঁচি-কাশির পরে: হাঁচি-কাশির সময় নাক ও মুখের মধ্যে থাকা জীবাণু হাতে জমা হয়, তাই এটি শেষ হওয়ার পর হাত ধোয়া জরুরি।

  1. কোনো অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার পর: অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর সঠিকভাবে হাত ধুলে রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি কমে।
  2. আবর্জনা পরিষ্কার করার পরে: ময়লা ও আবর্জনা পরিষ্কার করার পর জীবাণু হাতের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

হাত ধোয়ার সঠিক পদ্ধতি:

১. হাত ভিজিয়ে নিন: প্রথমে হাত পরিষ্কার পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন।

২. সাবান ব্যবহার করুন: হাতের তালু, আঙুলের ফাঁক, আঙুলের পেছন, হাতের পিঠ, আঙুলের ডগা ও নখের অংশ ভালোভাবে সাবান দিয়ে ঘষুন।

৩. অন্তত ২০ সেকেন্ড ঘষুন: হাতের প্রতিটি অংশ সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ঘষা উচিত।

৪. ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন: সাবান ঘষা শেষ হলে পরিষ্কার পানি দিয়ে হাতের সাবান ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

৫. শুকনো তোয়ালে বা টিস্যু ব্যবহার করুন: হাত ধোয়ার পর পরিষ্কার তোয়ালে বা টিস্যু দিয়ে ভালোভাবে হাত মুছে নিন।

কেন হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ?

  • রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক: বিভিন্ন জীবাণু, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া হাতের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে রোগ সৃষ্টি করে। সঠিকভাবে হাত ধুলে এই জীবাণুগুলো মেরে ফেলা সম্ভব।
  • ডায়রিয়া ও অন্যান্য পেটের রোগ থেকে রক্ষা পেতে: বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া ও অন্যান্য পেটের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়, যা হাতের মাধ্যমে সহজেই ছড়ায়।
  • ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: পরিষ্কার হাত মানেই জীবাণুমুক্ত হাত। এটি আমাদের দৈনন্দিন পরিচ্ছন্নতার অংশ।

হাত ধোয়ার ভুলগুলি:

১. পর্যাপ্ত সময় না নেওয়া: অনেক সময় আমরা দ্রুত হাতে সাবান লাগিয়ে ধুয়ে ফেলি, যা সঠিক নয়। অন্তত ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ঘষা উচিত।

২. সাবান না ব্যবহার করা: শুধু পানি দিয়ে হাত ধুলে জীবাণু পুরোপুরি ধ্বংস হয় না। তাই সাবান অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

৩. হাতের সব অংশ পরিষ্কার না করা: হাতের তালু, আঙুলের ফাঁক এবং নখের অংশ খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা অনেক সময় আমরা পরিষ্কার করি না।

সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস আমাদের এবং আমাদের আশেপাশের মানুষদের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সহায়ক। ছোট ছোট অভ্যাস যেমন নিয়মিত হাত ধোয়া রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে হবে এবং আমাদের শিশুদেরও এ বিষয়ে সচেতন করে তোলা জরুরি।

ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top