জরায়ু টিউমারের লক্ষণসমূহ

জরায়ু টিউমার (uterine tumor), যা সাধারণত জরায়ু ফাইব্রয়েড বা জরায়ুর ক্যান্সারের আকারে দেখা দেয়, নারীদের জরায়ুতে বিকৃত কোষের গঠন বা অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে হয়। এটি মারাত্মক না হলেও, কিছু ক্ষেত্রে এটি ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে। তাই এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনে রাখা খুবই জরুরি।

জরায়ু টিউমারের সাধারণ লক্ষণসমূহ:

  1. মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত: জরায়ু টিউমারের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো মাসিকের সময় অস্বাভাবিক ভারী রক্তপাত। কিছু নারীর ক্ষেত্রে মাসিকের সময়ের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে রক্তপাত হতে পারে।
  2. মাসিক চক্রের অনিয়ম: মাসিকের সময়ের পরিবর্তন, যেমন: মাসিকের দেরি হওয়া বা মাসিকের সময়কাল কমে যাওয়া, জরায়ু টিউমারের সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে।
  3. পেটে ব্যথা ও চাপ অনুভব: জরায়ু টিউমার থাকলে তলপেটে ব্যথা অনুভব হতে পারে, বিশেষ করে বড় টিউমার থাকলে। এর ফলে পেটে চাপ বা ভারী অনুভূতিও হতে পারে।
  4. মূত্রত্যাগের সমস্যা: জরায়ু টিউমার বড় হলে এটি মূত্রাশয়ে চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে ঘন ঘন মূত্রত্যাগের প্রয়োজন অনুভূত হতে পারে। এছাড়াও মূত্রত্যাগের সময় জ্বালা বা অস্বস্তি হতে পারে।
  5. কোমর বা পিঠে ব্যথা: জরায়ুর টিউমার অনেক সময় পিঠ বা কোমরের দিকে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এটি মূলত টিউমারের আকার বড় হলে ঘটে।
  6. অস্বাভাবিক ক্লান্তি: দীর্ঘমেয়াদী ও ভারী রক্তপাতের কারণে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে, যার ফলে শরীরে ক্লান্তি এবং দুর্বলতার অনুভূতি তৈরি হতে পারে।
  7. যৌন মিলনের সময় ব্যথা: জরায়ু টিউমার থাকলে যৌন মিলনের সময় ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এটি জরায়ুর টিস্যুর পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে।
  8. পেটে ফোলাভাব বা ফুলে যাওয়া: বড় টিউমার থাকলে পেট ফুলে যেতে পারে, যা অনেক সময় গর্ভাবস্থার মতোও দেখাতে পারে।
  9. গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা: পেটে টিউমার বড় হলে এটি অন্ত্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাসের সমস্যা বা পেট ফাঁপা অনুভব হতে পারে।
  10. অস্বাভাবিক স্রাব: জরায়ু থেকে অস্বাভাবিক স্রাব বা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব আসতে পারে, যা টিউমারের কারণে হতে পারে।

    raju akon youtube channel subscribtion

করণীয়:

  • যদি উপরোক্ত লক্ষণগুলোর কোনোটির সঙ্গে পরিচিত হন, তবে অবিলম্বে একজন গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • প্রয়োজনীয় পরীক্ষা, যেমন আল্ট্রাসাউন্ড বা এমআরআই, করে জরায়ুতে টিউমার আছে কিনা তা নির্ণয় করা যেতে পারে।
  • চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ বা সার্জারির মাধ্যমে টিউমার অপসারণ করা যেতে পারে।

জরায়ু টিউমারের লক্ষণগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা জরুরি। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করলে এর ঝুঁকি কমানো সম্ভব হয়। টিউমারের লক্ষণগুলো উপেক্ষা না করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানো যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top