রোটা ভাইরাস একটি গুরুতর ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যা মূলত শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার অন্যতম প্রধান কারণ। এই ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত ৫ বছরের নিচে বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে শিশু খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। সংক্রমণের লক্ষণগুলো জানা থাকলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়।
নিচে রোটা ভাইরাস সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. তীব্র ডায়রিয়া:
- রোটা ভাইরাসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো তীব্র ডায়রিয়া, যা হঠাৎ করেই শুরু হয়।
- শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন অনেকবার পাতলা ও পানিসমৃদ্ধ পায়খানা হতে পারে।
২. বমি:
- সংক্রমণের শুরুর দিকে সাধারণত বমি হতে থাকে।
- প্রথম ২-৩ দিন ধরে এই বমি চলতে থাকে যা শিশুর দেহে পানিশূন্যতা তৈরি করতে পারে।
৩. জ্বর:
৪. পেট ব্যথা:
- শিশুরা পেট ব্যথার কথা বলতে পারে বা পেটের অস্বস্তি প্রকাশ করতে পারে।
- অনেক সময় পেট ফুলে যেতে পারে।
৫. পানিশূন্যতা (Dehydration):
- রোটা ভাইরাসের কারণে দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, যার ফলে দ্রুত পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
- পানিশূন্যতার লক্ষণগুলো হল: মুখ ও জিহ্বা শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চোখের চারপাশে গর্ত পড়া, কম প্রস্রাব হওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং অস্বাভাবিক আচরণ।
৬. খাওয়া-দাওয়ার প্রতি অনীহা:
- সংক্রমণের কারণে শিশুরা খাওয়া-দাওয়াতে অনীহা দেখায়।
- বমি ও ডায়রিয়ার কারণে খাদ্য গ্রহণে আগ্রহ হারাতে পারে।
৭. দুর্বলতা:
- দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও বমির ফলে শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব করে।
রোটা ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়:
- রোটা ভাইরাসের টিকা (রোটাটেক বা রোটারিক্স) নেওয়া উচিত, যা শিশুকে রোটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে।
- শিশুদের পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানি ও খাবার খাওয়ানো উচিত।
- হাত ধোয়ার অভ্যাস শেখানো এবং শিশুদের পরিচ্ছন্ন রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
রোটা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং শিশুদের গুরুতরভাবে অসুস্থ করতে পারে। লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রোটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা একটি কার্যকর প্রতিরোধক ব্যবস্থা, যা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।