Substance Withdrawal এর কারণ, লক্ষণ এবং সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক যা নিজের উপর প্রয়োগ করা যায়

Substance Withdrawal হলো এমন একটি মানসিক এবং শারীরিক অবস্থা, যা দীর্ঘমেয়াদী মাদকদ্রব্য ব্যবহারের পর হঠাৎ করে তা বন্ধ করার ফলে সৃষ্ট হয়। এই অবস্থায় ব্যক্তির শরীর এবং মন মাদকদ্রব্যের অভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, যা শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণ সৃষ্টি করে। সঠিক থেরাপি এবং সেলফ-হেল্প টেকনিকের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

Substance Withdrawal এর কারণসমূহ

Substance Withdrawal সাধারণত নিম্নোক্ত কারণগুলির দ্বারা উদ্ভূত হতে পারে:

  1. দীর্ঘমেয়াদী মাদকদ্রব্য ব্যবহার: দীর্ঘ সময় ধরে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার শরীরকে সেই মাদকের উপর নির্ভরশীল করে তোলে। যখন হঠাৎ করে সেই মাদকদ্রব্য বন্ধ করা হয়, তখন Withdrawal এর লক্ষণ দেখা দেয়।
  2. মাদকদ্রব্যের আকস্মিক বন্ধ: ধীরে ধীরে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার কমানোর পরিবর্তে যদি আকস্মিকভাবে তা বন্ধ করা হয়, তাহলে Withdrawal এর সম্ভাবনা বেশি হয়।
  3. শারীরিক এবং মানসিক নির্ভরতা: মাদকদ্রব্যের উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্ভরতার কারণে Withdrawal এর লক্ষণগুলি তীব্র হতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

Substance Withdrawal এর লক্ষণসমূহ

Substance Withdrawal এর লক্ষণগুলো মাদকদ্রব্যের প্রকারভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:

  1. আবেগীয় পরিবর্তন: হঠাৎ করে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, বা উত্তেজনা অনুভব করা।
  2. শারীরিক লক্ষণ: ঘাম হওয়া, কম্পন, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, এবং হার্টবিটের বৃদ্ধি।
  3. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন: খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছা কমে যাওয়া বা বমি বমি ভাব অনুভব করা।
  4. ঘুমের সমস্যা: অনিদ্রা, ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি, বা অতিরিক্ত ঘুম।
  5. মাদকদ্রব্যের জন্য তীব্র আকর্ষণ: মাদকদ্রব্যের প্রতি তীব্র আকর্ষণ এবং পুনরায় তা ব্যবহারের ইচ্ছা।

Substance Withdrawal এর জন্য সিবিটি থেরাপির সেলফ-হেল্প টেকনিক

১. ট্রিগার চিহ্নিতকরণ এবং পরিহার (Identifying and Avoiding Triggers)
  • কীভাবে কাজ করে: Withdrawal এর সময় মাদকদ্রব্যের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে পারে এমন ট্রিগারগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলো পরিহার করা।
  • নিজের উপর প্রয়োগ: মাদকদ্রব্যের জন্য আকর্ষণ সৃষ্টি করে এমন স্থান, মানুষ, বা পরিস্থিতি চিহ্নিত করুন এবং সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
২. কগনিটিভ রিফ্রেমিং (Cognitive Restructuring)
  • কীভাবে কাজ করে: নেতিবাচক চিন্তা এবং বিশ্বাসগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোকে ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন করা।
  • নিজের উপর প্রয়োগ: Withdrawal এর সময় যখনই নেতিবাচক চিন্তা আসে, যেমন “আমি এটা সহ্য করতে পারব না”, তখন তা পরিবর্তন করে বলুন “আমি শক্তিশালী, আমি এটি মোকাবিলা করতে পারব।”
৩. ইমোশন রেগুলেশন (Emotion Regulation)
  • কীভাবে কাজ করে: আবেগ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে Withdrawal এর সময় মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমানো।
  • নিজের উপর প্রয়োগ: শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করুন, ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং ছেড়ে দিন। এটি আপনার মনকে শান্ত করতে সাহায্য করবে।
৪. বিহেভিয়ারাল অ্যাক্টিভেশন (Behavioral Activation)
  • কীভাবে কাজ করে: Withdrawal এর সময় মনকে ব্যস্ত রাখতে নতুন কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজেকে সক্রিয় রাখা।
  • নিজের উপর প্রয়োগ: প্রতিদিন একটি করে নতুন কার্যকলাপ শুরু করুন, যেমন ব্যায়াম করা, সৃজনশীল কাজ করা, বা নতুন কিছু শিখা।
৫. সোশ্যাল সাপোর্ট (Social Support)
  • কীভাবে কাজ করে: Withdrawal এর সময় সমর্থনকারী মানুষদের সাথে সংযোগ রাখা, যারা আপনাকে উৎসাহ দেবে।
  • নিজের উপর প্রয়োগ: আপনার পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটান, এবং আপনার অনুভূতিগুলো তাদের সাথে শেয়ার করুন।
৬. রিলাপ্স প্রতিরোধ পরিকল্পনা (Relapse Prevention Planning)
  • কীভাবে কাজ করে: Withdrawal এর সময় পুনরায় মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ইচ্ছা প্রতিরোধের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা।
  • নিজের উপর প্রয়োগ: একটি রিলাপ্স প্রতিরোধ পরিকল্পনা তৈরি করুন, যেখানে সংকটকালীন মুহূর্তে আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা নির্ধারণ করুন।

উপসংহার

Substance Withdrawal একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং সময় হতে পারে, তবে সঠিক সিবিটি থেরাপির কৌশল এবং সেলফ-হেল্প টেকনিক ব্যবহার করে এই অবস্থার মোকাবিলা করা সম্ভব। নিজের উপর আস্থা রেখে, আত্ম-সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং সঠিক কৌশলগুলি প্রয়োগ করে আপনি Substance Withdrawal-এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। নিয়মিত অনুশীলন এবং সমর্থন পেলে এই সময়টি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top