শীতের সবজি ‘বিট’ খাওয়ার অসাধারণ কিছু উপকারিতা

বিট (Beetroot) শীতের এক জনপ্রিয় এবং পুষ্টিকর সবজি। বিটের উজ্জ্বল লাল রং শুধু চোখেরই আনন্দ দেয় না, এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার, যা শরীরকে বিভিন্নভাবে সুস্থ রাখে। নিয়মিত বিট খেলে আপনি পেতে পারেন নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা।

বিটের অসাধারণ উপকারিতা:

১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

বিটে উচ্চ মাত্রায় নাইট্রেট থাকে, যা শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, বিটের রস পান করলে রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়, ফলে রক্তচাপ কমে যায়। এটি উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা যেমন হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

২. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে

বিটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা শরীরে রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক। আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে, যা শরীরে রক্ত তৈরি করতে সহায়তা করে এবং শরীরে অক্সিজেন প্রবাহ বাড়ায়।

৩. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে

বিটে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি বাড়াতে সহায়ক। নিয়মিত বিট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা দূর হয় এবং হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে।

৪. কিডনি ও যকৃতের সুরক্ষায় সহায়ক

বিটের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য কিডনি ও যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিটের বেটাইন নামক উপাদান লিভারের বিষাক্ততা দূর করতে সহায়ক, যা লিভারকে সুস্থ রাখে।

৫. শক্তি বৃদ্ধি করে

বিটে থাকা নাইট্রেট শরীরের অক্সিজেন গ্রহণের সক্ষমতা বাড়ায়, ফলে শরীরে বেশি শক্তি উৎপন্ন হয়। যাদের নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়, তাদের জন্য বিট খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।

৬. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে

বিটের নাইট্রেট মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। বয়সের সাথে সাথে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমতে থাকে, কিন্তু বিট নিয়মিত খেলে মস্তিষ্ক সতেজ থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

৭. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়

বিটে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ ও সুন্দর রাখে।

raju akon youtube channel subscribtion

৮. ওজন কমাতে সহায়ক

বিটে ক্যালরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় এটি ওজন কমাতে সহায়ক। নিয়মিত বিট খেলে আপনি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা অনুভব করবেন, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।

৯. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে

বিটে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

১০. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

বিটের গ্লাইসেমিক সূচক কম, ফলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। বিট রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়।

বিট খাওয়ার উপায়

  • বিটের রস বানিয়ে পান করতে পারেন।
  • স্যালাড হিসেবে বিট ব্যবহার করতে পারেন।
  • রান্না করা সবজির সাথে বিট মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • স্মুদি বা স্যুপে বিটের ব্যবহার করতে পারেন।

বিট শুধু একটি সবজি নয়, এটি একটি পুষ্টির ভাণ্ডার। শীতকালে বিট খাওয়া অত্যন্ত উপকারী, কারণ এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং নানা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিটের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেল আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। সুতরাং, আজই আপনার খাদ্যতালিকায় বিট যোগ করুন এবং এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা উপভোগ করুন।

ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top