গর্ভাবস্থায় মায়েদের ঘুমানোর অভ্যাস এবং শারীরিক আরাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত তৃতীয় ত্রৈমাসিকের দিকে ঘুমানোর ভঙ্গিমা ও অবস্থান সন্তানের সুরক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় সঠিক ঘুমানোর নিয়ম:
১. বাম পাশ করে ঘুমানো:
- গর্ভাবস্থায় বাম পাশ করে ঘুমানো সবচেয়ে ভালো। এতে গর্ভে থাকা বাচ্চার দিকে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। তাছাড়া, এই অবস্থানে গর্ভের চাপ কমে এবং কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।
২. পায়ের নিচে বালিশ রাখা:
- পিঠে চাপ কমানোর জন্য পায়ের নিচে একটি নরম বালিশ রাখা যেতে পারে। এতে পায়ে রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে এবং পায়ে ব্যথা বা ফোলা কম হবে।
৩. পিঠে বা চিত হয়ে ঘুমানো এড়ানো:
- পিঠে ঘুমালে গর্ভের ওজন মায়ের মেরুদণ্ড এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ওপর বেশি চাপ দেয়। এতে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হতে পারে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. পাশ ফিরে ঘুমানোর সময় পেটের নিচে বালিশ রাখা:
- যাঁরা পাশ ফিরে ঘুমান, তাঁরা পেটের নিচে ছোট একটা বালিশ রাখলে আরাম পাবেন। এটি পেটের ভারের কারণে ঘুমের সমস্যা কমিয়ে দেয়।
5. ঘুমের রুটিন তৈরি করা:
- প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময় ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করা উচিত। একটি নিয়মিত ঘুমের রুটিন ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করবে।
৬. নরম বিছানা ও আরামদায়ক বালিশ ব্যবহার:
- আরামদায়ক বিছানা ও নরম বালিশ ব্যবহার করলে ঘুমানোর সময় আরাম বেশি হবে। অতিরিক্ত নরম বা খুব শক্ত বিছানায় ঘুমালে ব্যথার সমস্যা বাড়তে পারে।
৭. ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম করা:
- গর্ভাবস্থায় হালকা ব্যায়াম করা ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। হাঁটা বা হালকা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে, তবে কোনো ধরনের শারীরিক অসুবিধা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করতে হবে।
৮. জল পান করা নিয়ন্ত্রণ করা:
- ঘুমানোর ঠিক আগে অতিরিক্ত পানি পান করলে বারবার টয়লেটে যেতে হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই ঘুমানোর আগে জল পান করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৯. ঘুমানোর আগে হালকা খাবার খাওয়া:
- গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর আগে হালকা খাবার খেলে ভালো ঘুম হয়। তবে খুব ভারী খাবার এড়ানো উচিত, কারণ তা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
১০. শান্ত পরিবেশে ঘুমানো:
- ঘুমানোর ঘরটি শান্ত ও অন্ধকার রাখা উচিত। গর্ভাবস্থায় ভালো ঘুমের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যা:
অনেক গর্ভবতী মা ঘুমের সমস্যা যেমন— অনিদ্রা, পায়ে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদির সম্মুখীন হন। এসময় দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য মেডিটেশন বা শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে। যদি ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা জরুরি।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।