সোশ্যাল অ্যাংজাইটির লক্ষণ ও উপসর্গ

সোশ্যাল অ্যাংজাইটি একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেখানে একজন ব্যক্তি সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বস্তি, ভয়, বা উদ্বেগ অনুভব করে। এই অবস্থা অনেক সময় ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি করে এবং সামাজিক যোগাযোগ বা মেলামেশার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে। নিচে সোশ্যাল অ্যাংজাইটির কিছু সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গ নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. অতিরিক্ত উদ্বেগ

সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে ভুগতে থাকা ব্যক্তিরা প্রায়শই সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন থাকে। তারা আগেই কল্পনা করে যে পরিস্থিতি তাদের জন্য কঠিন হবে এবং এটি তাদের মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

raju akon youtube channel subscribtion

২. আত্মসম্মানের অভাব

নিজেকে নিচু ভাবা, অন্যদের থেকে কম যোগ্য বা কম মূল্যবান মনে করা সোশ্যাল অ্যাংজাইটির একটি সাধারণ লক্ষণ। এতে তারা অনেক সময় সামাজিক মেলামেশা থেকে দূরে থাকে।

৩. সামাজিক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা

অনেক সময় সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি সামাজিক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। যেমন—পার্টি, অফিস মিটিং, বা এমনকি বন্ধুদের সাথে আড্ডা এড়ানো।

৪. শারীরিক লক্ষণ

সোশ্যাল অ্যাংজাইটি শুধু মানসিক নয়, শারীরিক উপসর্গও দেখা যায়। যেমন:

  • দ্রুত হৃদস্পন্দন
  • ঘাম হওয়া
  • কাঁপুনি
  • মাথা ঘোরা
  • শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া

৫. কথা বলতে বা অন্যদের সামনে পারফর্ম করতে অস্বস্তি

যখন কাউকে জনসম্মুখে কথা বলতে হয় বা কোনো কাজ করতে হয়, তখন সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে ভুগতে থাকা ব্যক্তিরা অতিরিক্ত চাপ অনুভব করে। তারা প্রায়ই অন্যরা তাদের বিচার করবে বা খারাপ ভাববে বলে আশঙ্কা করে।

৬. সামাজিক পরিস্থিতিতে প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত সময় নেওয়া

যারা সোশ্যাল অ্যাংজাইটি নিয়ে ভোগেন, তারা কোনো সামাজিক পরিস্থিতিতে যোগ দেওয়ার আগে দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে চেষ্টা করেন, যাতে তারা ভুল না করেন বা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ না করেন।

৭. নেতিবাচক চিন্তা

সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করে। তারা ধরে নেয় যে অন্যরা তাদের সম্পর্কে খারাপ ভাবছে বা বিচার করছে।

৮. অতিরিক্ত আত্ম-সমালোচনা

যে কোনো সামাজিক পরিস্থিতির পর, তারা প্রায়শই নিজেদের কাজ বা কথাবার্তা নিয়ে অতিরিক্ত সমালোচনা করে এবং মনে করে যে তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি।

উপসংহার

সোশ্যাল অ্যাংজাইটি একটি সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে এটি চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সঠিক কাউন্সেলিং, কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি (CBT), এবং কখনো কখনো ঔষধের মাধ্যমে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ সোশ্যাল অ্যাংজাইটির লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top