সেন্সরি বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট | Sensory Behaviour Management for Autism

সেন্সরি বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেন্সরি প্রসেসিং ডিসঅর্ডার (SPD) বা সেন্সরি বিহেভিয়ার জনিত সমস্যা প্রায়ই অটিজম আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশুরা ইন্দ্রিয়গত সংবেদনশীলতায় অতিরিক্ত বা নিম্ন প্রতিক্রিয়া দেখায়। এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে সঠিক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে শিশুর সেন্সরি বিহেভিয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

সেন্সরি বিহেভিয়ার কি?

সেন্সরি বিহেভিয়ার হচ্ছে শিশুর ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হওয়া। উদাহরণস্বরূপ, কিছু শিশু অতিরিক্ত শব্দ, আলো, বা স্পর্শ সহ্য করতে পারে না এবং অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখায়। আবার কিছু শিশু এমন জিনিসের প্রতি নিম্ন সংবেদনশীলতা দেখায় যেগুলো সাধারণত অস্বস্তিকর হওয়া উচিত।

সেন্সরি বিহেভিয়ারের লক্ষণ:

  1. শব্দ বা আলোর প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা।
  2. নির্দিষ্ট পোশাক পরতে অনীহা।
  3. অতিরিক্ত গতিশীল হওয়া (Hyperactivity)।
  4. নির্দিষ্ট ধরনের খাবার গ্রহণে সমস্যা।
  5. আলো বা শব্দে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া।
  6. নির্দিষ্ট গন্ধ বা স্বাদের প্রতি সংবেদনশীলতা।

raju akon youtube channel subscribtion

সেন্সরি বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্টের উপায়:

  1. সেন্সরি ইন্টিগ্রেশন থেরাপি (Sensory Integration Therapy): এটি বিশেষভাবে তৈরি থেরাপি যেখানে শিশুর ইন্দ্রিয়গত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো মোকাবেলা করার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই থেরাপি শিশুর সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
  2. ডিপ প্রেশার থেরাপি (Deep Pressure Therapy): শিশুর শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিপ প্রেশার থেরাপি কার্যকর। শিশুর শরীরে গভীর চাপ প্রয়োগ করে সংবেদনশীলতা কমানো সম্ভব।
  3. ভারী কাজ বা একটিভিটি (Heavy Work Activity): শিশুদের ভারী কাজ যেমন দৌড়ানো, ঝাঁপানো, বা ভারী কোনো কিছু বহন করানোর মাধ্যমে তাদের ইন্দ্রিয়গত সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  4. পরিবেশের পরিবর্তন (Environmental Modification): শিশুর আশেপাশের পরিবেশ পরিবর্তন করে তাদের জন্য সেন্সরি সমস্যাগুলো কমানো সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, অল্প আলো এবং শব্দ কমিয়ে দিয়ে শিশুদের মানসিক চাপ কমানো যায়।
  5. ক্যালমিং টেকনিক (Calming Techniques): ক্যালমিং টেকনিক যেমন, ধীর শ্বাস প্রশ্বাসের অনুশীলন, নরম ওষ্ঠ দিয়ে সঙ্গীত শোনানো ইত্যাদি শিশুর মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে।

সেন্সরি বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব:

  • সঠিক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে শিশুর প্রতিদিনের জীবনযাত্রা সহজ করা সম্ভব।
  • শিক্ষার অগ্রগতি বৃদ্ধি পায় এবং শেখার পরিবেশ ভালো হয়।
  • শিশুর মানসিক চাপ কমে এবং পরিবার ও সামাজিক জীবনে সমন্বয় বাড়ে।

উপসংহার:

সেন্সরি বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা অটিজম আক্রান্ত শিশুর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা উন্নত করতে সহায়তা করে। সঠিক থেরাপি, পরিবেশের পরিবর্তন, এবং পরিবারের সহযোগিতায় এই সমস্যা সমাধান করা যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top