মানসিক রোগ একটি অত্যন্ত জটিল এবং সংবেদনশীল বিষয়। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে মানসিক রোগ আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে। কিন্তু অনেক সময় রোগী এবং তার পরিবার অপচিকিৎসার শিকার হন, যা রোগকে আরও গুরুতর করে তোলে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা অপচিকিৎসার কারণে মানসিক রোগের ভয়ংকর রূপ নিয়ে আলোচনা করব।
অপচিকিৎসার প্রভাব
১. রোগের অবনতি: অপচিকিৎসার কারণে মানসিক রোগ আরও খারাপ হতে পারে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগের উপসর্গগুলি বেড়ে যায় এবং রোগীর জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়।
২. শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার ফলে রোগী ভুল ঔষধ বা ডোজ গ্রহণ করতে পারেন, যা শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কখনও কখনও মারাত্মক হতে পারে।
৩. সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব: অপচিকিৎসার কারণে রোগী এবং তার পরিবারের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটে। রোগী কর্মক্ষমতা হারায় এবং পরিবার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
অপচিকিৎসার সাধারণ কারণ
১. অযোগ্য চিকিৎসক: অপচিকিৎসার একটি প্রধান কারণ হল অযোগ্য চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করা। অনভিজ্ঞ বা অপ্রশিক্ষিত চিকিৎসকরা মানসিক রোগের সঠিক চিকিৎসা দিতে অক্ষম হন।
২. সঠিক তথ্যের অভাব: অনেক সময় রোগী এবং তার পরিবার সঠিক তথ্যের অভাবে অপচিকিৎসার শিকার হন। অজ্ঞতা এবং কুসংস্কারের কারণে রোগের সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন।
৩. সামাজিক চাপ: সামাজিক চাপ এবং কুসংস্কার অনেক সময় রোগী এবং তার পরিবারকে অপচিকিৎসার দিকে ঠেলে দেয়। সমাজের ভয় এবং লোকলজ্জার কারণে রোগী সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন না।
অপচিকিৎসা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
১. পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ: মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য পেশাদার এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক রোগের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পেশাদার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২. সঠিক তথ্য সংগ্রহ: রোগী এবং তার পরিবারকে মানসিক রোগ এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
৩. সামাজিক সচেতনতা: মানসিক রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সমাজে কুসংস্কার এবং অজ্ঞতার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
উপসংহার
অপচিকিৎসার কারণে মানসিক রোগ ভয়ংকর রূপ নিতে পারে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগীর জীবন বিপর্যস্ত হয় এবং সমাজের উপর এর প্রভাব পড়ে। অপচিকিৎসা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ, সঠিক তথ্য সংগ্রহ এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Writer:
Raju Akon, MPhil-DU, Counselling Psychologist at PMHCC.