১০ মাস বয়সেও ঘাড় শক্ত হয়নি! কি করবো? | শিশুর ঘাড় শক্ত করার উপায়

শিশুর জন্মের পর ঘাড় শক্ত হতে সময় লাগে। সাধারনত, ৩-৪ মাস বয়স থেকে শিশুর ঘাড় শক্ত হতে শুরু করে এবং ৬ মাসের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু তাদের ঘাড় ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে, কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হতে পারে। ১০ মাস বয়সেও যদি ঘাড় শক্ত না হয়, তা হলে বাবা-মায়ের উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। এর পেছনে কিছু শারীরিক এবং বিকাশগত কারণ থাকতে পারে, তবে কিছু উপায় অনুসরণ করে আপনি শিশুর ঘাড় শক্ত করতে সাহায্য করতে পারেন।

কেন ঘাড় শক্ত হয়নি?

১. দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যা: যদি কোনো শিশু প্রাকৃতিকভাবে দুর্বল বা পেশী সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয়, তাহলে ঘাড় শক্ত হতে দেরি হতে পারে। চিকিৎসা পরামর্শ নিয়ে শারীরিক থেরাপি শুরু করা প্রয়োজন হতে পারে।

২. উন্নয়নমূলক বিলম্ব: কিছু শিশুর বিকাশ প্রক্রিয়া স্বাভাবিকের তুলনায় একটু ধীরগতিতে হয়। যদি শিশুর অন্যান্য মাইলস্টোনগুলো (যেমন হামাগুড়ি, বসা) সঠিক সময়ে অর্জিত হয়, তবে ঘাড় শক্ত না হওয়া সাধারণ বিষয় হতে পারে।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য ও মাংসপেশীর দুর্বলতা: শিশুর পেশী দুর্বল হলে ঘাড় শক্ত হতে সমস্যা হতে পারে। শিশুর শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং ব্যায়াম এর অভাবে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

শিশুর ঘাড় শক্ত করার উপায়

১. প্রতিদিনের “Tummy Time”: শিশুকে প্রতিদিন কিছুক্ষণ পেটের ওপর শোয়ান। এটি ঘাড় ও পিঠের পেশী শক্ত করতে সাহায্য করবে। তবে খুব বেশি সময় পেটের উপর রাখবেন না, প্রথমে কয়েক মিনিট করে শুরু করুন এবং পরে সময় বাড়ান।

২. আকর্ষণীয় খেলনা ব্যবহার: শিশুর সামনে আকর্ষণীয় খেলনা রাখুন, যাতে সে সেই খেলনাগুলো ধরার চেষ্টা করে বা তার দিকে তাকানোর চেষ্টা করে। এটি ঘাড়ের পেশীকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।

৩. ম্যাসাজ ও ব্যায়াম: শিশুর ঘাড়ের পেশীতে হালকা চাপ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। এটি পেশীকে নরম করবে এবং শক্তিশালী হতে সাহায্য করবে। এছাড়া পেশী স্ট্রেচিং ব্যায়াম করাতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি করা উত্তম।

৪. শরীরের নড়াচড়া বাড়ান: শিশুর হাতে-পায়ে মুভমেন্ট বাড়ানোর চেষ্টা করুন। এটি ঘাড়সহ অন্যান্য পেশীকে শক্তিশালী করবে এবং শিশুকে সক্রিয় হতে উৎসাহিত করবে।

৫. শিশুর মাথা ধরে রাখুন: শিশুকে কোলে নেয়ার সময় তার ঘাড়ের পেছনে হাত রাখুন এবং ধীরে ধীরে তার মাথা ধরে রাখার জন্য তাকে উৎসাহিত করুন। এটি শিশুর মাথা ও ঘাড়ের সঠিক অবস্থান বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

৬. ফিজিওথেরাপি: যদি উপরের পদ্ধতিগুলো কাজ না করে, তবে ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিন। বিশেষজ্ঞের সহায়তায় ঘাড়ের পেশী শক্ত করতে বিশেষ ব্যায়াম করানো যেতে পারে।

কখন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করবেন?

যদি ১০ মাস বয়সের পরও আপনার শিশুর ঘাড় শক্ত না হয়, বা অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তারা প্রয়োজন অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারবেন।

উপসংহার

শিশুর ঘাড় শক্ত না হলে এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিছু ব্যায়াম ও সঠিক যত্নের মাধ্যমে এটি সমাধান করা সম্ভব। তবে, যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top