কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT Therapy) কিভাবে করা হয়?

কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT) মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের জন্য একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যা রোগীর চিন্তাভাবনা এবং আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে। CBT থেরাপি সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়, যার মাধ্যমে রোগী ধীরে ধীরে তাদের নেতিবাচক চিন্তা ও আচরণ থেকে মুক্তি পেতে পারে।

CBT থেরাপির ধাপসমূহ:

১. প্রাথমিক মূল্যায়ন (Initial Assessment)

CBT থেরাপির প্রথম ধাপে, থেরাপিস্ট রোগীর বর্তমান সমস্যা, লক্ষণ, এবং অতীতের মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থা মূল্যায়ন করেন। এই ধাপে থেরাপিস্ট রোগীর চিন্তা, অনুভূতি, এবং আচরণের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করেন এবং থেরাপির লক্ষ্য নির্ধারণ করেন।

raju akon youtube channel subscribtion

২. সমস্যার চিহ্নিতকরণ (Identifying the Problems)

থেরাপিস্ট রোগীর নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং আচরণকে চিহ্নিত করেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি রোগী মনে করেন “আমি সবকিছুতে ব্যর্থ”, তবে থেরাপিস্ট সেই চিন্তার পিছনের কারণ এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।

৩. নতুন চিন্তা এবং বিশ্বাস গড়ে তোলা (Developing New Thoughts and Beliefs)

এই ধাপে, থেরাপিস্ট রোগীকে নেতিবাচক চিন্তা এবং বিশ্বাসগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য কৌশল শিখিয়ে দেন। এই ধাপে রোগী ইতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তিযুক্ত চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য কাজ করেন।

৪. আচরণগত পরিবর্তন (Behavioral Change)

রোগীকে তাদের নেতিবাচক আচরণগুলো পরিবর্তন করতে সহায়তা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি রোগী সবসময় উদ্বেগে ভুগেন, তবে তাকে উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল শেখানো হয়, যা তাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রয়োগ করতে উৎসাহিত করা হয়।

৫. অভ্যাস গড়ে তোলা (Building Habits)

CBT থেরাপি রোগীকে নতুন এবং ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কৌশল, যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক সময়ে ঘুমানো, এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা।

৬. পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন (Monitoring and Evaluation)

থেরাপি চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে থেরাপিস্ট রোগীর উন্নতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী থেরাপির কৌশল পরিবর্তন করেন।

CBT থেরাপির উপকরণ:

  • রোল প্লে (Role Play): থেরাপিস্ট এবং রোগী বিভিন্ন পরিস্থিতির মাধ্যমে রোল প্লে করে নেতিবাচক চিন্তা ও আচরণ পরিবর্তনের জন্য কাজ করেন।
  • হোমওয়ার্ক: থেরাপিস্ট রোগীকে বিভিন্ন কার্যক্রম বা ব্যায়াম দেয়, যা রোগী থেরাপি সেশনের বাইরে সম্পন্ন করেন।
  • জার্নাল রাইটিং (Journal Writing): রোগী তাদের চিন্তা, অনুভূতি, এবং অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেন, যা থেরাপিস্টকে তাদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দেয়।

উপসংহার

কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT) একটি কাঠামোবদ্ধ এবং প্রমাণভিত্তিক পদ্ধতি, যা রোগীর নেতিবাচক চিন্তা, অনুভূতি, এবং আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এই থেরাপি সঠিকভাবে পরিচালিত হলে, এটি রোগীর জীবনে স্থায়ী এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

প্রাসঙ্গিক হ্যাশট্যাগস:

#CBT #কগনিটিভবিহেভিয়ারথেরাপি #মানসিকস্বাস্থ্য #থেরাপি #বাংলা


Raju Akon – Counseling Psychologist
Pinel Mental Health Care Centre,
222/1B, South Pirerbag, Mirpur-2, Dhaka -1216
📞 ফোন: 01681006726

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top