মানসিক রোগের চিকিৎসায় ওষুধের ব্যবহার আজকাল খুবই সাধারণ। ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, স্কিৎজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার ইত্যাদি মানসিক রোগের চিকিৎসায় নানা ধরনের ওষুধ ব্যবহৃত হয়। তবে, অনেকেই প্রশ্ন করেন: মানসিক রোগের ওষুধ কতটা ভয়ঙ্কর? এর সাইড ইফেক্ট এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মানসিক রোগের ওষুধের সাইড ইফেক্ট
মানসিক রোগের ওষুধের কিছু সাধারণ সাইড ইফেক্ট হতে পারে, যা নীচে উল্লেখ করা হলো:
- শারীরিক সাইড ইফেক্ট:
- মাথাব্যথা
- বমিভাব বা বমি
- ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস
- হৃৎস্পন্দনের পরিবর্তন
- মানসিক সাইড ইফেক্ট:
- ঘুমের সমস্যা
- উদ্বেগ বা উদ্বেগ বৃদ্ধি
- বিষণ্ণতা বা মনমরা ভাব
- স্মৃতিশক্তির সমস্যা
- যৌনস্বাস্থ্য সমস্যা:
- যৌন আকাঙ্ক্ষার হ্রাস
- যৌন ক্ষমতার হ্রাস
- পেশী ও শারীরিক সমস্যা:
- পেশী দুর্বলতা
- থাইরয়েড সমস্যা
ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি
মানসিক রোগের ওষুধের সাইড ইফেক্ট ছাড়াও, এর কিছু দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি থাকতে পারে:
- আসক্তি:
- কিছু ওষুধের আসক্তি তৈরি হতে পারে, যা বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
- লং-টার্ম হেলথ ইফেক্ট:
- দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে কিছু ওষুধের লিভার, কিডনি বা হার্টের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।
- সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবন:
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সাইড ইফেক্ট মোকাবেলার উপায়
ওষুধের সাইড ইফেক্ট মোকাবেলার জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে:
- ডাক্তারের সাথে পরামর্শ:
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে প্রথমেই ডাক্তারকে জানানো উচিত। ডাক্তার ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করতে পারেন বা বিকল্প ওষুধ দিতে পারেন।
- লাইফস্টাইল পরিবর্তন:
- সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত রাখতে সাহায্য করে।
- মনিটরিং:
- ওষুধের ব্যবহার মনিটরিং করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
উপসংহার
মানসিক রোগের ওষুধ ভয়ঙ্কর নয়, তবে এর সাইড ইফেক্ট এবং ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধের সাইড ইফেক্ট মোকাবেলা করা সম্ভব। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ওষুধ এবং জীবনধারা অনুসরণ করা অপরিহার্য।
Writer:
Raju Akon, MPhil-DU, Counselling Psychologist at PMHCC