কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা শরীরের বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বের করে শরীরকে সুস্থ রাখে। কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে টক্সিন জমতে থাকে, যা বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করতে পারে। কিডনি ভালো রাখতে কিছু বিশেষ খাবার নিয়মিত খেলে কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমানো যায়।
কিডনি ভালো রাখতে উপকারী কিছু খাবার:
১. বেরি জাতীয় ফল:
ব্লুবেরি, ক্র্যানবেরি, রাসবেরি এবং স্ট্রবেরির মতো বেরি জাতীয় ফল কিডনি ভালো রাখতে দারুণ উপকারী। এই ফলগুলোতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা কিডনির কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ক্র্যানবেরি কিডনির ইনফেকশন প্রতিরোধেও সহায়ক।
২. পানি:
কিডনির জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান হলো পানি। পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করলে কিডনি ভালো থাকে এবং শরীর থেকে টক্সিন দূর হয়। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
৩. ফ্যাটি ফিশ:
স্যামন, ম্যাকারেল, স্যাডিনের মতো ফ্যাটি ফিশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা কিডনির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি কিডনির সুরক্ষায় সহায়ক এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কার্যকর।
৪. গ্রীন টি:
গ্রীন টি-তে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং প্রদাহরোধী উপাদান কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক। এটি কিডনির ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং কিডনি ফাংশন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৫. লাল আঙুর:
লাল আঙুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-তে ভরপুর, যা কিডনির জন্য উপকারী। এতে রেসভেরাট্রল নামে একটি উপাদান থাকে, যা কিডনি সুরক্ষায় সহায়ক এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৬. ডার্ক লিফি গ্রিনস (গাঢ় সবুজ শাকসবজি):
গাঢ় সবুজ শাক যেমন পালং শাক, ব্রকলি, এবং কেল এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিনে ভরপুর। এগুলো কিডনির ফাংশন ঠিক রাখতে এবং কিডনির সুরক্ষায় সহায়ক। তবে কিডনি রোগীদের জন্য অতিরিক্ত শাকসবজি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৭. ফলমূল ও শাকসবজি:
অ্যাপল, চেরি, পেঁপে এবং আনারসের মতো ফল ও শাকসবজি কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। এগুলো কিডনি ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে এবং কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায়।
৮. লেবু এবং সাইট্রাস ফল:
লেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফল কিডনির পাথর প্রতিরোধ করতে সহায়ক। এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনির পাথর গঠনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে।
৯. রসুন:
রসুন একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার, যা কিডনির কার্যকারিতা ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি কিডনি সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
১০. অলিভ অয়েল:
অলিভ অয়েল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি কিডনি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানির পরিমাণ বৃদ্ধি, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর খাবার গ্রহণ কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে। কিডনি ভালো রাখতে এসব খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.