অনেক পুরুষের কাছে মহিলাদের সাথে কথা বলার সময়, বিশেষ করে যৌন সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বীর্যপাত হতে পারে। এটি সাধারণত “প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন” বা “দ্রুত বীর্যপাত” নামে পরিচিত। এই সমস্যা অনেকের জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবের কারণ হতে পারে। মহিলাদের সাথে কথা বললেই বীর্যপাত হলে এটি শুধু শারীরিক নয়, মানসিক এবং আবেগগত সমস্যার কারণ হতে পারে।
এই সমস্যার পেছনে কয়েকটি সাধারণ কারণ:
১. অতিরিক্ত উত্তেজনা
মহিলাদের সাথে কথা বলার সময় অতিরিক্ত মানসিক উত্তেজনা এবং সেক্সুয়াল থটসের কারণে কিছু পুরুষের বীর্যপাত হতে পারে। এটি সাধারণত তরুণদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, যারা যৌনতার প্রতি সহজেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
২. আত্মবিশ্বাসের অভাব
যৌন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার সময় অনেক পুরুষ মানসিকভাবে অনিরাপদ বোধ করেন। এই মানসিক অনিরাপত্তা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবের কারণে হঠাৎ বীর্যপাত হতে পারে।
৩. সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টর
প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন অনেক ক্ষেত্রেই মানসিক অবস্থার কারণে ঘটে থাকে। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, এবং অতিরিক্ত এক্সপেক্টেশন এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪. অতীতের খারাপ অভিজ্ঞতা
কোনো পূর্বের খারাপ অভিজ্ঞতা বা যৌন সংক্রান্ত ভুল ধারণা থাকলে, তা থেকেও বীর্যপাত দ্রুত হতে পারে। এটি সাধারণত অল্প বয়সে ঘটে এবং পরবর্তীতে মানসিক প্রভাব ফেলে।
৫. শারীরিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা
শারীরিক ক্লান্তি এবং দুর্বলতা থাকা অবস্থায় বীর্য নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে। এর ফলে মহিলাদের সাথে কথা বলার সময় বীর্যপাত হতে পারে।
সমাধানের কিছু কার্যকর উপায়
১. মাইন্ডফুলনেস টেকনিকস
মাইন্ডফুলনেস বা মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা এমন একটি পদ্ধতি যা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। মহিলাদের সাথে কথা বলার সময় আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর মনোযোগ দিন। এটি আপনার উত্তেজনা এবং উদ্বেগকে কমাতে সহায়ক হবে।
২. ব্যায়াম এবং শারীরিক ফিটনেস
শারীরিকভাবে সুস্থ এবং ফিট থাকা বীর্য নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আপনার শরীরকে শক্তিশালী করে এবং দ্রুত বীর্যপাতের ঝুঁকি কমায়।
৩. থেরাপি এবং পরামর্শ
যদি মানসিকভাবে আপনি এই সমস্যায় ভোগেন, তবে একজন সাইকোলজিস্ট বা সেক্স থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। তারা আপনাকে মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারেন এবং সঠিক থেরাপি দিতে পারেন।
৪. স্টার্ট-স্টপ এবং স্কুইজ টেকনিক
এই দুইটি পদ্ধতি বীর্যপাত নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। স্টার্ট-স্টপ টেকনিক হলো বীর্যপাতের কাছাকাছি এসে কিছুক্ষণ বিরতি নেওয়া এবং তারপর আবার শুরু করা। স্কুইজ টেকনিক হলো বীর্যপাতের আগে লিঙ্গের শীর্ষে হালকা চাপে ধরা, যা বীর্যপাতের প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে।
৫. স্বাস্থ্যকর যৌন অভ্যাস
যৌন শিক্ষা এবং সঠিক যৌন অভ্যাস রপ্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। মহিলাদের সাথে কথা বলার সময় অতিরিক্ত যৌন চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। আপনার শরীর এবং মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর জন্য ধীরে ধীরে এগিয়ে যান।
৬. মেডিটেশন এবং রিলাক্সেশন
রোজকার জীবনধারায় ধ্যান এবং রিলাক্সেশন টেকনিকস নিয়ে কাজ করলে আপনার মানসিক চাপ কমে যায়। নিয়মিত ধ্যান করলে আপনার মস্তিষ্ক শান্ত থাকে এবং যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
উপসংহার
মহিলাদের সাথে কথা বললেই বীর্যপাত হওয়া একটি মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা, যা ঠিক করা সম্ভব। সঠিক থেরাপি, মানসিক প্রস্তুতি, এবং শারীরিক ফিটনেস এই সমস্যার সমাধানে কার্যকর হতে পারে। যদি এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, তবে একজন সাইকোলজিস্ট বা সেক্স থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা উচিত।