সাইকোসিস হলে কি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়?

সাইকোসিস একটি গুরুতর মানসিক অবস্থা যা বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্নতার সৃষ্টি করে। সাইকোসিসের প্রভাব এবং লক্ষণগুলি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। অনেক সময় সাইকোসিসের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন হতে পারে, তবে সব ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য নয়। সাইকোসিস হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নির্ভর করে রোগীর লক্ষণ, পরিস্থিতি এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরের উপর।

সাইকোসিসের লক্ষণ ও চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা

সাইকোসিসের লক্ষণগুলি প্রধানত হ্যালুসিনেশন, বিভ্রান্তি, অস্বাভাবিক আচরণ এবং বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্নতা। এই লক্ষণগুলি গুরুতর হলে এবং রোগীর নিজের বা অন্যদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। হাসপাতালের পরিবেশে সঠিক চিকিৎসা ও মনিটরিং এর মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করা সহজ হয়।

raju akon youtube channel subscribtion

কখন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে

  1. আত্মহত্যার ঝুঁকি:
    • রোগী যদি আত্মহত্যার চিন্তা বা প্রচেষ্টা করে, তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অত্যাবশ্যক।
  2. আক্রমণাত্মক আচরণ:
    • রোগী যদি আক্রমণাত্মক বা সহিংস আচরণ করে এবং নিজে বা অন্যকে ক্ষতি করার প্রবণতা থাকে, তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন।
  3. অত্যন্ত বিভ্রান্তি:
    • যদি রোগী বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে অক্ষম হয়, তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন।
  4. ঔষধের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ:
    • কিছু ক্ষেত্রে, সাইকোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন হতে পারে।

হাসপাতালে ভর্তি না হলেও সম্ভব চিকিৎসা

সব সময় সাইকোসিসের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন হয় না। অনেক ক্ষেত্রে, বাড়িতে থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করা সম্ভব। রোগী এবং তার পরিবারের জন্য কিছু সঠিক পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে:

  • পর্যাপ্ত সমর্থন: পরিবারের সমর্থন এবং সঠিক যত্ন সাইকোসিসের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ।
  • মেডিকেশন: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ।
  • থেরাপি: মানসিক থেরাপি, যেমন কগনিটিভ বিহেভিওর থেরাপি (CBT)।
  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম।

উপসংহার

সাইকোসিস হলে কখনো কখনো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষ করে যদি রোগীর আত্মহত্যার ঝুঁকি, আক্রমণাত্মক আচরণ, অত্যন্ত বিভ্রান্তি বা ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই বাড়িতে থেকে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে সাইকোসিসের লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সঠিক চিকিৎসা, মানসিক থেরাপি, এবং পরিবারের সমর্থনের মাধ্যমে রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।

Writer:
Raju Akon, MPhil-DU, Counselling Psychologist at PMHCC

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top