পেপটিক আলসার এমন একটি স্বাস্থ্য সমস্যা যেখানে পাকস্থলী বা ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই সমস্যার মূল কারণ হলো অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন যা পাকস্থলীর ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত করে। পেপটিক আলসার রোগীদের বিশেষভাবে খাদ্য গ্রহণে সতর্ক থাকা উচিত। কিছু খাবার রোগের লক্ষণ কমাতে সহায়ক হতে পারে এবং কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
পেপটিক আলসার রোগীদের জন্য উপকারী খাবার:
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার:
- শাক-সবজি, ফলমূল, এবং সারা শস্যজাত খাবার। যেমন: ওটমিল, ব্রাউন রাইস, পালং শাক, আপেল, পেয়ারা। এগুলো আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে।
- প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার:
- প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীর স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং আলসার নিরাময়ে সহায়তা করে। যেমন: দই, কেফির, কম্বুচা, এবং ফারমেন্টেড খাবার।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার:
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার পেটের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। যেমন: ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ব্রকলি, টমেটো।
- ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার:
- লেবু, কমলা, আমলকি, এবং অন্যান্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার পেপটিক আলসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- দুধ ও দুধজাত খাবার (সীমিত পরিমাণে):
- দুধ পাকস্থলীতে সাময়িকভাবে সান্ত্বনা দিতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে খেলে তা অ্যাসিড উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই পরিমিতভাবে খেতে হবে।
- কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার:
- হাড়ের ঝোল এবং অন্যান্য কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার পাকস্থলীর ঝিল্লি মজবুত করতে সহায়ক।
- উপযুক্ত তরল গ্রহণ:
পেপটিক আলসার রোগীদের এড়িয়ে চলতে হবে যেসব খাবার:
- অতিরিক্ত মশলাদার খাবার:
- ঝাল-মশলাদার খাবার পাকস্থলীর ঝিল্লি আরও উত্তেজিত করে যা আলসার বৃদ্ধি করতে পারে।
- অ্যাসিডিক খাবার:
- টমেটো, সাইট্রাস ফল (লেবু, কমলা) এবং অতিরিক্ত টক খাবার যা পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
- ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়:
- চা, কফি, চকোলেট, এবং সোডা পানীয় যা অ্যাসিড উৎপাদন বাড়ায়।
- অ্যালকোহল:
- অ্যালকোহল পাকস্থলীর ঝিল্লিকে দুর্বল করে এবং আলসারের ক্ষতি বাড়াতে পারে।
- ভাজা এবং তৈলাক্ত খাবার:
- ভাজা খাবার এবং অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়ায়, যা আলসার বৃদ্ধির সম্ভাবনা করে।
- মেন্থল ও পিপারমিন্ট:
- মেন্থল এবং পিপারমিন্ট পেটের অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়িয়ে দেয়, যা আলসারের লক্ষণকে আরও খারাপ করতে পারে।
কিছু অতিরিক্ত টিপস:
- নিয়মিত খাবার গ্রহণ: দীর্ঘ সময় ক্ষুধার্ত থাকলে পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বেড়ে যায়, যা আলসারকে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই নিয়মিত কম পরিমাণে খাবার খান।
- নিয়মিত পানি পান: খাবারের সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করলে পাকস্থলীর অ্যাসিড কমতে পারে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ: আলসারের জন্য যদি কোনো ওষুধ নির্ধারণ করা হয়, সেগুলো সঠিকভাবে গ্রহণ করুন এবং খাবারের অভ্যাসেও নিয়মিত পরিবর্তন আনুন।