পেটে পাথর হওয়ার কারণ

পেটে পাথর হওয়া বা কিডনিতে পাথর জমা হওয়া (kidney stones) একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে ঘটে থাকে। পাথর মূলত ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি উপাদান থেকে গঠিত হয় এবং এটি সাধারণত কিডনিতে বা মূত্রনালীর অন্যান্য অংশে তৈরি হয়। কিছু কিছু অভ্যাস এবং শারীরিক অবস্থা এই সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

পেটে পাথর হওয়ার প্রধান কারণ:

  1. অপ্রতুল পানি পান: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খেলে শরীরে মূত্রের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং এতে লবণ ও খনিজ জমা হতে শুরু করে, যা পরে পাথরের রূপ নেয়। দিনে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে কিডনি পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  2. খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুগ্ধজাত পণ্য, এবং অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালংশাক, বীট, চকলেট বেশি খেলে কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও, অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারও পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ায়।
  3. ইউরিক অ্যাসিডের অতিরিক্ততা: শরীরে বেশি পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হলে তা কিডনিতে জমে পাথর তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যারা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেয়ে থাকেন, যেমন লাল মাংস, তাদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি।
  4. জেনেটিক ফ্যাক্টর: পরিবারে যদি কারো কিডনিতে পাথর জমার ইতিহাস থাকে, তবে অন্যান্য সদস্যদেরও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  5. মূত্রনালীর সংক্রমণ: মূত্রনালীতে যদি কোনো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে, তবে তার ফলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে। সংক্রমণের কারণে মূত্রের রাসায়নিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় এবং তা পাথর তৈরিতে সহায়ক হয়।
  6. অতিরিক্ত ওষুধ সেবন: কিছু ওষুধ যেমন ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট বা অ্যান্টাসিড বেশি পরিমাণে সেবন করলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  7. অতিরিক্ত ওজন: শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে ইউরিক অ্যাসিড এবং ক্যালসিয়ামের স্তর বাড়ে, যা পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়ায়। স্থূলতা এবং মেটাবলিক সিন্ড্রোমের কারণে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  8. শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: যারা কম শারীরিক পরিশ্রম করেন এবং সারাদিন বসে কাজ করেন, তাদের মধ্যে পাথর জমার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। দীর্ঘদিন শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা শরীরে ক্যালসিয়াম জমার কারণ হতে পারে।

    raju akon youtube channel subscribtion

পেটে বা কিডনিতে পাথর হওয়া অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক এবং এটি সময়মতো চিকিৎসা না করলে আরও বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এই সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। যদি পেটে পাথর জমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top