কিডনি বড় হয়ে যাওয়া বা কিডনির সাইজ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া এক ধরনের শারীরিক সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাসের একটি লক্ষণ। এই সমস্যার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে।
কিডনি বড় হয়ে যাওয়ার সাধারণ কারণ:
১. হাইড্রোনেফ্রোসিস:
- হাইড্রোনেফ্রোসিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে কিডনিতে প্রস্রাব জমে থাকে এবং কিডনি ফুলে যায়। এটি প্রস্রাবের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ার কারণে হতে পারে, যা প্রোস্টেট সমস্যা, পাথর, বা টিউমারের কারণে ঘটে।
২. কিডনিতে পাথর:
- কিডনিতে পাথর থাকলে তা কিডনির মধ্যে ব্লক তৈরি করতে পারে, ফলে কিডনিতে প্রস্রাব জমে এবং কিডনি বড় হয়ে যায়। এ অবস্থায় ব্যথা এবং প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়।
৩. পলিসিস্টিক কিডনি রোগ (PKD):
- এটি একটি জেনেটিক অবস্থা, যেখানে কিডনিতে সিস্ট (পানিভর্তি থলি) গঠিত হয় এবং কিডনির আকার বৃদ্ধি পায়। এটি কিডনি কার্যক্ষমতায় ধীরে ধীরে প্রভাব ফেলে।
৪. ইনফেকশন (পাইলোনেফ্রাইটিস):
- কিডনির ইনফেকশন বা প্রদাহের কারণে কিডনি ফুলে যেতে পারে। এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে ঘটে এবং প্রস্রাবে জ্বালা ও ব্যথা অনুভব হয়।
৫. প্রোস্টেটের বৃদ্ধি:
- পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে প্রস্রাবের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে, ফলে কিডনিতে প্রস্রাব জমা হয় এবং কিডনি বড় হয়ে যায়।
৬. টিউমার বা ক্যান্সার:
- কিডনির টিউমার বা কিডনি ক্যান্সারের কারণে কিডনির আকার বৃদ্ধি পেতে পারে। এটি কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতায় বাধা সৃষ্টি করে।
৭. ইউরেটার ব্লকেজ:
- কিডনি থেকে প্রস্রাব বহনকারী নালী (ইউরেটার) ব্লক হলে কিডনিতে প্রস্রাব জমে কিডনি বড় হয়ে যেতে পারে।
৮. কিডনিতে রক্ত জমাট:
- কিডনির ধমনীতে বা শিরায় রক্ত জমাট বাঁধলে কিডনি বড় হয়ে যেতে পারে। এটি রক্ত প্রবাহের সমস্যার কারণে ঘটে।
কিডনি বড় হওয়ার লক্ষণ:
- পিঠের নিচের দিকে ব্যথা
- প্রস্রাবে জ্বালা বা রক্তের উপস্থিতি
- প্রস্রাব করতে কষ্ট হওয়া
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ
- শরীরে ফোলাভাব (বিশেষ করে পা ও মুখে)
- বমি বমি ভাব ও ক্ষুধামন্দা
কিডনি বড় হলে করণীয়:
- ডাক্তারের পরামর্শ: কিডনি বড় হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- ইউএসজি বা সিটি স্ক্যান: কিডনির আকার ও কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করতে ইউএসজি বা সিটি স্ক্যান করা হয়।
- কিডনির ফাংশন টেস্ট: রক্ত পরীক্ষা ও প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির কার্যক্ষমতা যাচাই করা হয়।
- প্রয়োজনীয় চিকিৎসা: যদি কিডনিতে পাথর বা ইনফেকশন থাকে, তবে ডাক্তার প্রয়োজনীয় ওষুধ বা সার্জারির পরামর্শ দিতে পারেন।
কিডনি বড় হয়ে যাওয়া একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা ও সঠিক যত্ন না নিলে এটি কিডনি ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিডনির যে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।