মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা পড়ার কারণ ও প্রতিকার

মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা পড়া বা ড্রুলিং (Drooling) একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি খুব অস্বস্তিকর হতে পারে। বিশেষ করে কথা বলার সময় বা ঘুমের মধ্যে অতিরিক্ত লালা পড়লে এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। মুখ দিয়ে লালা পড়া সাধারণত মুখের অভ্যন্তরীণ পেশির দুর্বলতা, নার্ভের সমস্যা, বা কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থার কারণে হতে পারে।

মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা পড়ার কারণ:

১. মুখের পেশির দুর্বলতা:

মুখের পেশি সঠিকভাবে কাজ না করলে মুখের অভ্যন্তরে লালার সঠিক নিয়ন্ত্রণ হয় না, ফলে অতিরিক্ত লালা পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

২. সাইনাস ইনফেকশন:

সাইনাস বা নাকের সংক্রমণ হলে মুখের ভেতর বেশি লালা তৈরি হয়। এটি গলায় জমা হতে পারে এবং অতিরিক্ত লালা মুখ দিয়ে পড়তে পারে।

৩. অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স:

গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স বা এসিডিটি হলে খাদ্যনালী এবং গলায় জ্বালাপোড়া হতে পারে, ফলে মুখের ভেতর বেশি লালা তৈরি হতে থাকে।

৪. নিউরোলজিক্যাল সমস্যা:

কিছু নিউরোলজিক্যাল সমস্যার কারণে মুখের পেশির কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে, যেমন পারকিনসন’স ডিজিজ, স্ট্রোক, সেরিব্রাল পালসি ইত্যাদি।

৫. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

কিছু ওষুধ যেমন সাইকোট্রপিক ওষুধ, ঘুমের ওষুধ, এবং অন্যান্য কিছু ওষুধ মুখে অতিরিক্ত লালা তৈরি করতে পারে।

৬. দাঁতের বা মাড়ির সমস্যা:

দাঁতের বা মাড়ির সমস্যার কারণে মুখে লালা বেশি তৈরি হতে পারে এবং তা মুখ দিয়ে পড়তে পারে।

অতিরিক্ত লালা পড়ার প্রতিকার:

১. মুখের ব্যায়াম:

মুখের পেশিকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত ব্যায়াম করা যেতে পারে। এতে মুখের পেশি লালার সঠিক নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।

২. নিয়মিত দাঁতের পরিচর্যা:

দাঁতের বা মাড়ির সমস্যার কারণে যদি মুখ দিয়ে লালা পড়ে, তবে নিয়মিত দাঁতের যত্ন নেওয়া উচিত। সময়মতো দাঁত ব্রাশ করা এবং ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৩. সাইনাস ইনফেকশনের চিকিৎসা:

যদি সাইনাস ইনফেকশনের কারণে অতিরিক্ত লালা তৈরি হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাইনাস ইনফেকশনের চিকিৎসা করানো উচিত। সঠিক চিকিৎসায় লালা কমে আসবে।

৪. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরীক্ষা:

যদি কোনো নির্দিষ্ট ওষুধের কারণে মুখ দিয়ে লালা পড়ে, তবে সেই ওষুধ পরিবর্তন বা কমানোর জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে।

৫. গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্সের নিয়ন্ত্রণ:

অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্সের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করা উচিত এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। এতে লালা তৈরি কমে যেতে পারে।

৬. নিউরোলজিক্যাল সমস্যার চিকিৎসা:

যদি কোনো নিউরোলজিক্যাল সমস্যার কারণে মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা পড়ে, তবে সেই সমস্যার সঠিক চিকিৎসা করানো উচিত। এটি দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবে।

মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা পড়া একটি অস্বস্তিকর সমস্যা হলেও এটি সাধারণত ক্ষণস্থায়ী এবং চিকিৎসাযোগ্য। সঠিক চিকিৎসা ও যত্ন গ্রহণ করলে মুখের লালা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে যদি সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top