ব্রেন স্ট্রোক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

ব্রেন স্ট্রোক একটি জীবনঘাতী স্বাস্থ্য সমস্যা, যা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হলে ঘটে। এটি দ্রুত চিকিৎসা না করালে মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে, এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই ব্রেন স্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।

ব্রেন স্ট্রোক কী?

ব্রেন স্ট্রোক তখন ঘটে যখন মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পায় না। প্রধানত এটি দুই ধরনের হয়:

  1. ইসকেমিক স্ট্রোক (Ischemic Stroke): এটি সবচেয়ে সাধারণ স্ট্রোক, যা তখন ঘটে যখন রক্তনালীতে ব্লকেজ সৃষ্টি হয় এবং মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত রক্ত পায় না।
  2. হেমোরেজিক স্ট্রোক (Hemorrhagic Stroke): এটি ঘটে যখন মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে যায় এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়।

    raju akon youtube channel subscribtion

ব্রেন স্ট্রোকের কারণ

  • উচ্চ রক্তচাপ
  • ডায়াবেটিস
  • ধূমপান ও মদ্যপান
  • অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল
  • স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
  • হৃদরোগ
  • মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা

ব্রেন স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ

  • মুখ, হাত বা পায়ের হঠাৎ অবশ হওয়া
  • কথা বলার সমস্যা বা অস্পষ্ট ভাষা
  • আকস্মিক তীব্র মাথাব্যথা
  • চোখে ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টিশক্তি হারানো
  • ভারসাম্যহীনতা ও চলাচলে সমস্যা

ব্রেন স্ট্রোক হলে কী করবেন?

  1. ফাস্ট (FAST) পদ্ধতি অনুসরণ করুন:

    • F (Face drooping) – মুখের একপাশ ঝুলে পড়ছে কি না
    • A (Arm weakness) – এক হাত দুর্বল বা অসাড় হচ্ছে কি না
    • S (Speech difficulty) – কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে কি না
    • T (Time to call emergency) – উপরের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  2. দ্রুত হাসপাতালে যান: যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করলে স্ট্রোকের ক্ষতি কমানো সম্ভব।
  3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: উচ্চ রক্তচাপ ব্রেন স্ট্রোকের প্রধান কারণ, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন
  • ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন
  • মানসিক চাপ কমান
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন

উপসংহার

ব্রেন স্ট্রোক একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা সময়মতো চিকিৎসা না করালে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তন ও সময়মতো সতর্কতা গ্রহণ করলে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তাই সচেতন থাকুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top