কোমরের মাংসপেশিতে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কাজের চাপ, আঘাত, মাংসপেশির টান, এবং অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে অনেকেই এই ব্যথায় ভোগেন। এটি তীব্র থেকে মৃদু হতে পারে এবং অনেক সময় দৈনন্দিন কাজেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। সঠিকভাবে কারণ জানা এবং যথাযথ প্রতিকার গ্রহণ করা হলে কোমরের মাংসপেশির ব্যথা কমানো সম্ভব।
কোমরের মাংসপেশিতে ব্যথার কারণ
১. মাংসপেশির টান: ভারী বস্তু তোলার সময় বা ভুল ভঙ্গিতে কাজ করার ফলে কোমরের মাংসপেশিতে টান লেগে ব্যথা হতে পারে।
২. দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা: যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তাদের মধ্যে কোমরের মাংসপেশিতে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে যারা সঠিক ভঙ্গিতে বসেন না।
৩. আঘাত: কোনো দুর্ঘটনা বা আঘাতের কারণে কোমরের মাংসপেশিতে ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত খেলাধুলা বা শারীরিক কার্যকলাপের সময় ঘটে থাকে।
৪. অনিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ: যারা খুব কম শারীরিক কার্যকলাপ করেন, তাদের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে, যার ফলে কোমরে ব্যথা দেখা দিতে পারে।
৫. গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণে কোমরের ব্যথা সাধারণ সমস্যা হয়ে থাকে।
৬. অস্টিওআর্থ্রাইটিস: কোমরের হাড়ের জোড়ায় ক্ষয়জনিত কারণে ব্যথা হতে পারে, যা বৃদ্ধ বয়সে বেশি দেখা যায়।
কোমরের মাংসপেশির ব্যথা দূর করার উপায়
১. ম্যাসাজ থেরাপি: কোমরের মাংসপেশিতে হালকা ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ম্যাসাজ করলে মাংসপেশি আরও নমনীয় হয়।
২. স্ট্রেচিং ও এক্সারসাইজ: কোমরের ব্যথা কমাতে হালকা স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম কার্যকর হতে পারে। প্রতিদিন নিয়মিত স্ট্রেচিং করলে মাংসপেশির টান কমে এবং কোমরের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৩. গরম ও ঠান্ডা থেরাপি: ব্যথার স্থানে প্রাথমিকভাবে ঠান্ডা সেঁক দেওয়া উচিত, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। পরে গরম সেঁক দিলে মাংসপেশি শিথিল হয়।
৪. ওষুধ সেবন: প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যথা নাশক ওষুধ সেবন করা যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা উচিত।
৫. পুষ্টিকর খাবার খাওয়া: পুষ্টিকর খাবার, যেমন ফলমূল, শাকসবজি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খেলে মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ব্যথা কমে।
৬. অতিরিক্ত বিশ্রাম এড়ানো: ব্যথার সময় সম্পূর্ণ বিশ্রাম না নিয়ে হালকা কাজ করতে থাকুন, এতে ব্যথা কমতে পারে। তবে ভারী কাজ বা বেশি পরিশ্রম এড়িয়ে চলা উচিত।
চিকিৎসকের পরামর্শ কখন প্রয়োজন
- যদি কোমরের ব্যথা কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে এবং কোনও প্রতিকার কাজ না করে।
- যদি কোমরের ব্যথার সঙ্গে পায়ে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট থাকে।
- যদি কোমরে ব্যথার কারণে হাঁটতে বা বসতে অসুবিধা হয়।
- যদি কোমরের ব্যথা কোনও আঘাতের কারণে ঘটে এবং তা গুরুতর মনে হয়।
কোমরের মাংসপেশিতে ব্যথা খুব সাধারণ সমস্যা হলেও সঠিক পরিচর্যা ও প্রতিকারের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যকর শারীরিক কার্যকলাপ কোমরের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করতে পারে এবং ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।