গর্ভাবস্থার সপ্তম মাস হল একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, যখন বাচ্চার নড়াচড়া স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়। এটি মায়ের জন্য আনন্দের পাশাপাশি উদ্বেগেরও কারণ হতে পারে। এই সময়ে বাচ্চার নড়াচড়া সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বাচ্চার স্বাস্থ্য ও সুস্থতার একটি ইঙ্গিত দেয়।
৭ মাসে বাচ্চার নড়াচড়া কেমন হওয়া উচিত?
সপ্তম মাসে বাচ্চার নড়াচড়া তুলনামূলকভাবে বেশি স্পষ্ট এবং নিয়মিত হয়। সাধারণত:
- নড়াচড়ার ধরন: ছোট ছোট লাথি মারা, হাত-পা নাড়ানো বা পেটের ভেতরে ঘোরাঘুরি।
- নড়াচড়ার সংখ্যা: দিনে অন্তত ১০-১২ বার নড়াচড়া অনুভব করা স্বাভাবিক।
- সময়: বাচ্চার নড়াচড়া সাধারণত মায়ের বিশ্রামের সময় বেশি অনুভূত হয়।
৭ মাসে বাচ্চার নড়াচড়া কম হওয়ার কারণ:
১. মায়ের অতিরিক্ত পরিশ্রম:
শারীরিক ক্লান্তি বা মানসিক চাপ বাচ্চার নড়াচড়া কমানোর কারণ হতে পারে।
২. পর্যাপ্ত খাবার ও পানির অভাব:
মায়ের শরীরে পুষ্টি বা পানির ঘাটতি হলে বাচ্চার নড়াচড়া কম হতে পারে।
৩. অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইডের পরিমাণ কম:
পেটের পানির পরিমাণ কমে গেলে বাচ্চার নড়াচড়ায় প্রভাব পড়তে পারে।
৪. অক্সিজেনের অভাব:
কোনো কারণে প্লাসেন্টার মাধ্যমে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পেলে বাচ্চা নড়াচড়া কমিয়ে দিতে পারে।
বাচ্চার নড়াচড়া না বুঝলে কি করবেন?
১. শান্ত হয়ে শুয়ে থাকুন:
একদিকে শুয়ে বিশ্রাম নিন এবং বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করার চেষ্টা করুন।
২. হালকা খাবার খান:
মিষ্টি জাতীয় খাবার বা ফল খেলে বাচ্চার নড়াচড়া বাড়তে পারে।
৩. ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন:
যদি ২ ঘণ্টার মধ্যে বাচ্চার নড়াচড়া অনুভূত না হয়, তবে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান।
৭ মাসে বাচ্চার নড়াচড়া সম্পর্কে মায়ের করণীয়:
১. সঠিক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন:
শাকসবজি, ফলমূল, প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন:
মায়ের বিশ্রামের সময় বাচ্চার নড়াচড়া বৃদ্ধি পায়।
৩. রেগুলার চেকআপ করুন:
গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপে নিয়মিত ডাক্তারি চেকআপ নিশ্চিত করুন।
৪. মানসিক চাপ কমান:
ধ্যান বা হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ দূর করুন।
কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?
১. বাচ্চার নড়াচড়া ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনুভূত না হলে।
২. তীব্র ব্যথা বা রক্তপাত হলে।
৩. বাচ্চার নড়াচড়া হঠাৎ করে খুব বেশি কমে গেলে।
উপসংহার:
গর্ভাবস্থার সপ্তম মাসে বাচ্চার নড়াচড়া মায়ের এবং বাচ্চার স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। এটি যদি নিয়মিত এবং স্বাভাবিক মনে না হয়, তবে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মায়ের যত্ন এবং সঠিক সচেতনতা বাচ্চার সুস্থ জন্ম নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
এই তথ্য শেয়ার করে গর্ভবতী মায়েদের সচেতন করতে সাহায্য করুন।