১. আপনার কি কি সমস্যা রয়েছে তার জন্য আপনি কাউন্সিলিং নিতে চাচ্ছেন?
মনোযোগের পরিবর্তন , মেজাজের পরিবর্তন, বিরক্তকর অনুভূতি, অবসন্ন, হীনমন্যতা, নিঃসঙ্গতা । আর আমার স্বভাবগুলো – অস্থির, মেয়েলি স্বভাব, অগোছালো কথা , একগুয়ে , হঠাৎ কোনো কিছু দেখলে সচেতন হয়ে যাই, যেকোনো কাজ ধীরে করি সাথে সাথে বুঝে উঠি না কিভাবে কি করব ।
২. বর্তমানে কি করলে বা কখন সমস্যাটি হয়?
ক্লাসে থাকাকালীন এই বসে আছি বেঞ্চ বা চেয়ারের শব্দ হচ্ছে মনে হচ্ছে আমার চেহারায় কানে বাড়ি খাচ্ছে মেজাজের পরিবর্তন হয় নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি না । আবার কেউ ঢুকবে আর তাকালাম কেমন মনোযোগ পরিবর্তন হয়ে গেল সচেতন হয়ে গেলাম। বিরক্তিকর অনুভব হয় এই বসে আছি দাড়িয়ে আছি , কথা বলতে যাবো কেউ প্রশ্ন করতেছে তখন আচমকা অনুভূতিটা মাথা , বুকে ছেয়ে যায়। কেউ তুচ্ছ কিছু বলে ফেললে মানতে পারি না মাথা বুকে চাপা ব্যথা অনুভব হয়।
৩. সমস্যাটি কবে থেকে এবং কিভাবে তৈরি হয়েছে বিস্তারিত বর্ণনা করুন।
স্যার আমি যখন মাধ্যমিক স্কুল, ইনটারমিডিয়েটে ছিলাম তখন ও স্কুল, কলেজ এ যাওয়ার আগে সকালে উদ্বিগ্ন বোধ করতাম বুকে গরম ব্যথার অনুভূত হতো যেতে ইচ্ছে করত না। ঐদিকে মা কল দিয়ে বাবার কাছে বিচার দিত । তখন বাবা আমার কথা শুনত না কোনো কোনো সময় গালাগালি করত ।
যখন কিশোর গঞ্জ থেকে আসত তখন মা বাবার ভয় দেখাতো যে ঠাকুর আসতাছে এখন কি করবি । আমার মধ্যে খারাপ , ভয়ের অনুভব করতাম । বাবা বাসায় এসে কাজ সেরে কঠোর ব্যবহার করত না বুঝে অযথা জোরে কথা বলত । আমি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত মাধ্যমিক স্কুল এ ছিলাম মা প্রায়ই হতাশা মূলক কথাবার্তা বলত আমাদের ভাই বোনকে নিয়ে। মামা থাকত আমাদের সাথে দুপুর কি রাতে প্রায়ই চেঁচামেচি করত টাকা পয়সা এটা সেটা নিয়ে। এর আগে ছোট খালা থাকত আমাদের সাথে তার বিয়ে সম্পর্ক নিয়ে অনেক ঝগড়া হাতাহাতি হয়। আমি সব প্রত্যখ করি । মা সারাদিন ধোঁয়া মোছা পরিষ্কার নিয়ে পড়ে থাকত । আমাদের তেমন সময় দিতো না দূরের কথা বরং গালাগালি অশ্রাব্য কথাবার্তা বলত । মা কাটাকাটি লাশ দেখতে পারতো না এগুলো ভয় করত। খুব ছোট বেলায় খাবার টাকার অভাব দেখেছিলাম ।
বাবা তার ব্যবসায় লোকসান খেয়ে ছেড়ে দেয় । আর দেওয়ানবাগী নামে পীর বাবা র দ্বারস্থ হন। এরপর চলে যান কিশোরগঞ্জে। বাবা তেমন সময় দিতে পারেন নি। স্যার বাবা মার কাছে বন্ধু ত পূর্ণ সম্পর্ক দেখিনি। তারা আমাদের ভাই বোনকে মনের দিক থেকে বড় করে তুলবেন এটা দেখিনি। ছোট খাট ব্যাপারে ঝগড়া হলে ছোট খালা আমার বোনকে খোঁচা দিয়ে বলত মার মতোই হইছছ একগুঁয়ে। আমি নিঃসঙ্গ অনুভব করতাম খাটের কোনায় উদাসীন ভাবে বসে থাকতাম। আমার মধ্যে খারাপ অভ্যাস তৈরি হয় ক্লাস ফাইভ থেকে এটা ছিল হস্তমৈথুন এর অভ্যাস। পেপার এ খারাপ ছবিগুলো দেখতাম। এখন ও মাঝেমধ্যে এটা করে ফেলি।
৪. বর্তমানে কি কি কারণে সমস্যা গুলো চলছে বলে আপনার মনে হয়?
আমার মনের কথা গুলো শুনবে অন্তত কিছু সময় এমন একজন ও সাপোর্টিভ মানুষ নেই বর্তমানে। আমি কাউন্সেলিং নিতে চেয়েছিলাম ১ বছর আগে। কিন্তু এখন অনেক পরে নিতেছি ইদানিং প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে কলেজে যাইনি । বাবা গালাগালি কঠিন ব্যবহার করছে। কলেজের প্রতে্্যক বিষয় আমার জন্য কঠিন। আয়ত করা কঠিন। বন্ধু দের সাথে আমার চলাফেরা বুদ্ধি তে মিলে না । গত জুলাই এ ভর্তি র পর থেকে অনেক বন্ধ দিয়েছি। এখন ভাবছি ছেড়ে দিব কিনা। কারণ সব বিষয় আমার খমতার বাইরে। বাবা প্রতি দিন গালাগালি, কঠোর ব্যবহার করছে মানুষ কি বলবে , কলেজ এভাবে বন্ধ দিলে ম্যাডাম কি বলবে। আরো কত কি । কিন্তু আমি এত কথার জবাব দিতে পারিনা। সারাদিন উনি কাজেই পড়ে থাকে । নিঃসঙ্গ অনুভব করছি। অনেক সময় কম্পিউটার স্ক্রিনে সময় কাটাচ্ছি।
৫. সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি কি কি পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন?
সমস্যা গুলো যখন হয় তখন জোরে শ্বাস প্রশ্বাস নিতাম । সন্ধ্যা র দিকে হাঁটাহাঁটি করতাম। পানি খেতাম। বেশ কম নামাজ পড়ি। সৃষ্টি কর্তা কে অনুভব করার চেষ্টা করি।
বাবা অনেক সময় বলে একা একা থাকিস না থাকলে তো মন খারাপ হইব শয়তানি চিন্তা ভর করব কিন্তু না থেকেও তো পারি না কারণ আশেপাশে আমার মনের কথা বুঝার মতো মানুষ নাই ।
৬. সর্বশেষে কাউন্সিলিং সম্পর্কে আপনার ধারণা কি? আপনি সাইকোলজিকাল কাউন্সিলিং থেকে কি আশা করেন?
কাউন্সেলিং সম্পর্কে আমার ধারণা হলো এটা নিরপেক্ষ মতামত, পরামর্শ যেটাতে একটা সঠিক সমাধান এ আসা হয় কোন ঝামেলা ছাড়াই। আমি আশা করি স্যার, এই কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে আমার ব্যক্তিগত সমস্যা নিরসন, ক্যারিয়ার ও সম্পর্কে র শীঘ্রই উন্নতি হবে ইনশাআল্লাহ।
এখন ১. কিভাবে অতীত জীবন থেকে তৈরি হওয়া সমস্যা , স্বভাব গুলোর সমাধান করা যায়?
২. ক্যারিয়ার সমাধান কিভাবে আত্মনির্ভরশীল হতে পারবো?