গরুর কলিজা (বিফ লিভার) পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি খাবার, যা শরীরের জন্য বেশ কিছু উপকার বয়ে আনে। এটি প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ। তবে, এটি খাওয়ার কিছু অপকারিতাও থাকতে পারে, বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে।
গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা:
- প্রচুর আয়রন: গরুর কলিজা আয়রন সমৃদ্ধ, যা শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। এটি রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) প্রতিরোধে কার্যকর।
- উচ্চ প্রোটিন: গরুর কলিজা প্রোটিনের ভালো উৎস, যা মাংসপেশি গঠনে, কোষের মেরামতে এবং শরীরের টিস্যু পুনরুদ্ধারে সহায়ক।
- ভিটামিন বি১২ এর উৎস: গরুর কলিজা ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ, যা স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যক্রমে সহায়ক এবং রক্তকণিকা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ভিটামিন এ এর উচ্চমাত্রা: গরুর কলিজা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ সরবরাহ করে, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
- ফোলেট এবং অন্যান্য ভিটামিন: কলিজাতে ফোলেট, ভিটামিন বি৬, এবং রাইবোফ্লাভিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনও রয়েছে, যা শরীরের সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করে।
গরুর কলিজা খাওয়ার অপকারিতা:
- কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে: গরুর কলিজাতে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশেষ করে যাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সমস্যা আছে, তাদের জন্য গরুর কলিজা বেশি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
- ভিটামিন এ বিষক্রিয়া: অতিরিক্ত ভিটামিন এ শরীরে জমা হলে তা বিষক্রিয়া (হাইপারভিটামিনোসিস) ঘটাতে পারে। ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- বিশেষ শারীরিক অবস্থায় ঝুঁকি: গর্ভবতী নারী এবং যারা অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণে ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের জন্য গরুর কলিজা নিয়মিত খাওয়া সঠিক নয়।
- পিউরিনের উপস্থিতি: গরুর কলিজাতে পিউরিন থাকে, যা গাঁটে ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে এবং গাউটের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

গরুর কলিজা পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও, নিয়মিত ও অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। নিয়ন্ত্রিতভাবে খেলে এটি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে যাদের হৃদরোগ, গাউট বা কোলেস্টেরল সংক্রান্ত সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি সঠিক নয়।