Antisocial personality disorder কি? এবং এর জন্য সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক যা নিজের উপরে এপ্লাই করা যায়

Antisocial Personality Disorder (ASPD) কি?

Antisocial Personality Disorder (ASPD) একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যা চরিত্রগতভাবে অপরাধমূলক আচরণ, সামাজিক নিয়মাবলী লঙ্ঘন, এবং অন্যদের প্রতি অমার্জিত বা নিষ্ঠুর আচরণের সাথে সম্পর্কিত। ASPD আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত সামাজিক এবং আইনগত বাধ্যবাধকতাগুলোর প্রতি তুচ্ছ মনোভাব প্রকাশ করে এবং অন্যদের প্রতি কোনও প্যাথোলজিক্যাল সহানুভূতির অভাব প্রদর্শন করে।

Antisocial Personality Disorder-এর লক্ষণ

  1. অপরাধমূলক আচরণ: বারবার আইন ভঙ্গ করা বা সামাজিক নিয়ম লঙ্ঘন করা।
  2. অপরাধী বা অসদাচরণ: প্রতারণা, মিথ্যাচার, বা অন্যদের সহায়তার অভাব।
  3. দায়িত্বহীনতা: পেশাদার ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব পালনে অক্ষমতা।
  4. ইম্পালসিভ আচরণ: ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের প্রতি ঝোঁক, যেমন মাদক ব্যবহার বা সহিংসতা।
  5. অন্যদের প্রতি শূন্য সহানুভূতি: অপরাধমূলক বা অমানবিক আচরণ করার সময় অন্যদের অনুভূতি বা ভাল-মন্দের প্রতি কম মনোযোগ।

raju akon youtube channel subscribtion

Antisocial Personality Disorder-এর জন্য সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক যা নিজের উপরে প্রয়োগ করা যায়

ASPD-র লক্ষণগুলি পরিচালনা করার জন্য সিবিটি (Cognitive Behavioral Therapy) কার্যকর হতে পারে। এখানে কিছু সিবিটি টেকনিক উল্লেখ করা হলো, যা একজন ব্যক্তি নিজের উপর প্রয়োগ করতে পারেন:

1. চিন্তার চ্যালেঞ্জ (Cognitive Restructuring):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার আচরণ ও চিন্তার মধ্যে কোন অস্বাভাবিকতা বা ভুল বিশ্বাস আছে কিনা তা চিহ্নিত করুন। উদাহরণস্বরূপ, “যদি আমি কিছু না করি, তাহলে আমাকে কেউ গুরুত্ব দেবে না।”
  • এই চিন্তাগুলোর যুক্তির মূল্যায়ন করুন এবং কোন যুক্তিসঙ্গত alternative চিন্তা খুঁজুন। উদাহরণস্বরূপ, “আমার ইতিবাচক কাজ ও আচরণের মাধ্যমে আমি সম্মান অর্জন করতে পারি।”
  • নতুন চিন্তাগুলোর প্রতি আপনার মনোভাব গড়ে তুলুন এবং পুরনো চিন্তাগুলোর প্রতি প্রতিক্রিয়া প্রদান করা বন্ধ করুন।

2. আচরণ পরিবর্তন (Behavioral Modification):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার আচরণের যে কোন নেতিবাচক অভ্যাস চিহ্নিত করুন, যেমন প্ররোচনার ভিত্তিতে কাজ করা বা অন্যদের প্রতি অমার্জিত আচরণ।
  • ছোট ছোট পদক্ষেপে নিজের আচরণ পরিবর্তন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিদিন একটি ছোট সামাজিক নিয়ম পালন করার চেষ্টা করুন যেমন কাউকে শ্রদ্ধা করা।
  • প্রতিটি সফল পদক্ষেপের জন্য নিজেকে পুরস্কৃত করুন, যা আপনার প্রেরণা বাড়াবে এবং নতুন আচরণ স্থির করতে সাহায্য করবে।

3. সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন (Improving Social Skills):

কীভাবে করবেন:

  • সামাজিক দক্ষতার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন, যেমন ভাল শোনা, আন্তরিক সংলাপ এবং সহানুভূতির প্রকাশ।
  • বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে এসব দক্ষতার অনুশীলন করুন এবং তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নিন।
  • এই দক্ষতাগুলির মাধ্যমে অন্যদের সাথে আপনার সম্পর্ক উন্নত হবে এবং অপরাধমূলক আচরণ কমবে।

4. ইমপালস নিয়ন্ত্রণ (Impulse Control):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার ইমপালসিভ আচরণ চিহ্নিত করুন এবং এমন পরিস্থিতির পরিকল্পনা করুন যেখানে আপনি আগের মতো প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।
  • প্রতিটি ইমপালসিভ মুহূর্তে কয়েক সেকেন্ড থামুন এবং গভীর শ্বাস নিন।
  • প্রতিরোধ করার জন্য একটি বিকল্প আচরণের পরিকল্পনা করুন, যেমন চাপ বা উত্তেজনার সময় একটি শান্তি পূর্ণ কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করা।

5. মুক্তি এবং ঝুঁকি ম্যানেজমেন্ট (Crisis Management and Coping Skills):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার চাপ এবং ঝুঁকির সৃষ্টিকারী পরিস্থিতিগুলোর জন্য একটি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা তৈরি করুন।
  • সহায়ক ম্যানেজমেন্ট কৌশল শিখুন, যেমন চাপ ব্যবস্থাপনা কৌশল, এবং তাদের নিজের জীবনে প্রয়োগ করুন।
  • সমস্যাগুলোর সাথে সমাধানের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করুন এবং একটি কার্যকর সংকট পরিকল্পনা তৈরি করুন।

6. স্ব-প্রশংসা এবং আত্মমুল্যায়ন (Self-Reinforcement and Self-Evaluation):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার আচরণের ইতিবাচক পরিবর্তনগুলির জন্য নিজেকে পুরস্কৃত করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি কোনও ইতিবাচক সামাজিক নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে নিজের জন্য একটি ছোট পুরস্কার দিন।
  • আপনার আচরণের অগ্রগতি মূল্যায়ন করুন এবং সাফল্য অর্জনের পর নিজেকে প্রশংসা করুন।

7. মেডিটেশন এবং মননশীলতা (Mindfulness and Meditation):

কীভাবে করবেন:

  • প্রতিদিন কিছু সময় নির্দিষ্ট করুন, যেমন 10-15 মিনিট, মননশীলতা বা মেডিটেশন অনুশীলনের জন্য।
  • আপনার চিন্তা ও আবেগের প্রতি সচেতনতা বাড়ান এবং অনুভব করুন যে কোন পরিস্থিতি আপনাকে কিভাবে প্রভাবিত করছে।
  • মননশীলতা আপনাকে আত্ম-সচেতন হতে এবং আপনার আচরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।

এই টেকনিকগুলো ASPD-র লক্ষণগুলো কমাতে এবং আরও ইতিবাচক আচরণ গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে। তবে, যদি আপনার সমস্যা গুরুতর হয় এবং নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়, তাহলে একজন পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top