Schizoid personality disorder কি? এবং এর জন্য সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক যা নিজের উপরে এপ্লাই করা যায়

Schizoid Personality Disorder (SPD) কি?

Schizoid Personality Disorder (SPD) একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেখানে ব্যক্তি সাধারণত একা থাকতে পছন্দ করেন এবং সামাজিক সম্পর্ক ও মিথস্ক্রিয়ায় অনীহা প্রদর্শন করেন। তারা প্রায়ই আবেগহীন বা সংবেদনশীলতাহীন হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করেন এবং খুব কমই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন। সামাজিক যোগাযোগ এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহের অভাব রয়েছে, যা তাদের একাকিত্বের দিকে ঠেলে দেয়।

Schizoid Personality Disorder-এর লক্ষণ

  1. একাকিত্বের প্রতি প্রবণতা: একা সময় কাটাতে পছন্দ করা এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় অনীহা।
  2. আবেগহীনতা: আবেগের বহিঃপ্রকাশ কম বা প্রায় না থাকা।
  3. ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভাব: বন্ধু, পরিবার বা অন্যদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভাব।
  4. আনন্দের অভাব: দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপে আনন্দ বা আগ্রহের অভাব।
  5. অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া: সামাজিক বা প্রশংসাসূচক প্রতিক্রিয়ায় প্রতিক্রিয়া না দেওয়া।

raju akon youtube channel subscribtion

Schizoid Personality Disorder-এর জন্য সিবিটি থেরাপির কিছু টেকনিক যা নিজের উপরে প্রয়োগ করা যায়

SPD-এর লক্ষণগুলি দূর করতে এবং সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সিবিটি (Cognitive Behavioral Therapy) কার্যকর হতে পারে। এখানে কিছু সিবিটি টেকনিক দেওয়া হলো, যা একজন ব্যক্তি নিজের উপর প্রয়োগ করতে পারেন:

1. চিন্তা চ্যালেঞ্জ (Cognitive Restructuring):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার একাকিত্ব এবং সামাজিক সম্পর্কের অনীহা নিয়ে যে নেতিবাচক চিন্তাগুলো রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করুন।
  • একটি ডায়েরিতে লিখে রাখুন যে কী কারণে আপনি সামাজিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন, এবং সেই চিন্তাগুলোর বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন করুন।
  • এই চিন্তাগুলোকে বাস্তবসম্মত এবং ইতিবাচক চিন্তায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা করুন, যেমন “আমি যদি কারো সাথে মিশি, তবে সেটি আমার জন্য খারাপ কিছু হবে না।”

2. সমাজে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হওয়া (Gradual Social Exposure):

কীভাবে করবেন:

  • ছোট এবং নির্দিষ্ট সামাজিক পরিস্থিতিতে নিজেকে ধীরে ধীরে জড়িত করার অনুশীলন করুন।
  • প্রথমে একান্তে পরিচিত ব্যক্তির সাথে কিছু সময় কাটানোর চেষ্টা করুন এবং ধীরে ধীরে অন্যান্য ছোট সামাজিক ঘটনায় অংশগ্রহণ করুন।
  • প্রতিটি অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিন এবং বুঝতে চেষ্টা করুন যে সামাজিক যোগাযোগ আপনার জন্য হুমকিস্বরূপ নয়।

3. আবেগ শিখা (Emotion Identification and Expression):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার অনুভূতিগুলো চিহ্নিত করতে শিখুন এবং সেগুলো কিভাবে প্রকাশ করবেন তা নির্ধারণ করুন।
  • প্রতিদিন নিজের অনুভূতিগুলো লিখে রাখুন এবং সেগুলো প্রকাশ করার উপায় খুঁজুন, যেমন কারো সাথে আলোচনা করা বা একটি জার্নালে লেখা।
  • এই পদ্ধতি আপনাকে আপনার সংবেদনশীলতাহীনতাকে কাটিয়ে উঠতে এবং আরও আবেগপূর্ণ হতে সাহায্য করবে।

4. আচরণমূলক পরীক্ষা (Behavioral Experiments):

কীভাবে করবেন:

  • আপনার চিন্তাগুলোর প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য কিছু আচরণমূলক পরীক্ষা পরিকল্পনা করুন।
  • উদাহরণস্বরূপ, কারো সাথে একটি সাধারণ আলোচনা শুরু করুন এবং দেখুন আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানান।
  • প্রতিবারের পরীক্ষায় আপনি বুঝতে পারবেন যে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া প্রায়ই যতটা ভয়াবহ মনে হয় ততটা নয়।

5. নিজের জন্য পুরস্কার (Self-Reinforcement):

কীভাবে করবেন:

  • প্রতিবার আপনি সামাজিক কোন কাজে অংশগ্রহণ করলে বা নতুন কারো সাথে কথা বললে, নিজেকে একটি ছোট পুরস্কার দিন।
  • এটি হতে পারে আপনার পছন্দের খাবার খাওয়া, একটি মুভি দেখা, অথবা নিজেকে প্রশংসা করা।
  • এই পদ্ধতি আপনাকে সামাজিক কাজগুলিতে আরও উৎসাহী হতে সাহায্য করবে।

6. মননশীলতা (Mindfulness):

কীভাবে করবেন:

  • প্রতিদিন কিছু সময় নিয়ে মননশীলতা বা মেডিটেশন অনুশীলন করুন।
  • আপনার মনের যে চিন্তাগুলো আসছে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করুন এবং সেগুলোর ওপর মনোনিবেশ করার চেষ্টা করুন।
  • মননশীলতা আপনাকে আপনার চিন্তা ও আবেগগুলো সম্পর্কে আরও সচেতন হতে এবং সামাজিক সম্পর্কগুলোকে আরও সহজভাবে নিতে সাহায্য করবে।

7. সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন (Improving Social Skills):

কীভাবে করবেন:

  • সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কিছু টেকনিক শিখুন, যেমন সক্রিয় শোনা, আলোচনায় অংশগ্রহণ, এবং যোগাযোগে চোখের সংযোগ।
  • বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে অনুশীলন করুন এবং তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নিন।
  • ক্রমাগত অনুশীলনের মাধ্যমে, আপনি সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে পারবেন।

এই টেকনিকগুলো অনুসরণ করলে Schizoid Personality Disorder-এর লক্ষণগুলি কমানো সম্ভব। তবে, যদি সমস্যা গুরুতর হয় এবং নিজে থেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়, তাহলে একজন পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top