অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের শারীরিক লক্ষণ কি কি? 

অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার বা উদ্বেগজনিত রোগ এমন একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যা অনেক মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি কেবল মানসিক নয়, বরং শারীরিক লক্ষণও সৃষ্টি করতে পারে। কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট রাজু আকন আপনাদের জানাচ্ছেন অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের কিছু সাধারণ শারীরিক লক্ষণ সম্পর্কে।

অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের শারীরিক লক্ষণ

  1. হৃদস্পন্দনের বৃদ্ধি:
    • উদ্বেগের সময় হৃদপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হয়।
    • বুক ধড়ফড় করা বা প্যালপিটেশন অনুভূত হতে পারে।
  2. শ্বাসকষ্ট:
    • গভীর শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।
    • শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব হতে পারে।

      raju akon youtube channel subscribtion

  3. ঘাম হওয়া:
    • উদ্বেগের সময় অতিরিক্ত ঘাম হয়।
    • হাত, পা, এবং মুখে ঘাম হতে পারে।
  4. কাঁপুনি:
    • শরীরের বিভিন্ন অংশে কাঁপুনি বা কাপুনি হতে পারে।
    • বিশেষ করে হাত এবং পায়ে কাঁপুনি অনুভূত হতে পারে।
  5. মাংসপেশির টান:
    • মাংসপেশিতে টান বা চাপ অনুভূত হতে পারে।
    • ঘাড়, পিঠ, এবং কাঁধের মাংসপেশিতে টান অনুভূত হতে পারে।
  6. মাথা ঘোরা:
    • উদ্বেগের সময় মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।
    • কখনও কখনও চোখের সামনে অন্ধকার দেখা যায়।
  7. পেটের সমস্যা:
    • পেটের সমস্যা যেমন বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, বা পেটে ব্যথা হতে পারে।
    • হজমে সমস্যা হতে পারে এবং ক্ষুধা কমে যেতে পারে।
  8. ঘুমের সমস্যা:
    • উদ্বেগের কারণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।
    • ঘুম আসতে সমস্যা, ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যাওয়া, বা রাতে ঘুম না আসা।
  9. শরীরে জ্বালাপোড়া:
    • শরীরের বিভিন্ন অংশে জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।
    • মুখ, হাত, পা, এবং বুকে জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।
  10. অতিরিক্ত ক্লান্তি:
    • উদ্বেগের কারণে অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।
    • দৈনন্দিন কাজ করতে কষ্ট হতে পারে।

অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা

  1. কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি (CBT):
    • CBT উদ্বেগজনিত চিন্তা এবং আচরণ পরিবর্তনে সহায়ক।
    • সঠিক থেরাপিস্টের মাধ্যমে উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন।
  2. মেডিকেশন:
    • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন।
    • উদ্বেগ কমাতে এবং শারীরিক লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ সহায়ক।
  3. মেডিটেশন এবং রিলাক্সেশন টেকনিক:
    • নিয়মিত মেডিটেশন এবং শিথিলকরণ ব্যায়াম উদ্বেগ কমাতে সহায়ক।
    • গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম করে দেখুন।
  4. স্বাস্থ্যকর জীবনধারা:
    • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়ক।
    • ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পরিহার করুন।
  5. সমর্থন ব্যবস্থা:
    • পরিবার, বন্ধু, এবং সহকর্মীদের সমর্থন মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়ক।
    • উদ্বেগের সময় তাদের সাথে কথা বলুন এবং সহায়তা নিন।

উপসংহার

অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার মানসিক এবং শারীরিক লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে, যা দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে। সঠিক চিকিৎসা এবং থেরাপির মাধ্যমে উদ্বেগজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের শিকার হন, তবে দয়া করে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top