শিশুদের মানসিক রোগের চিকিৎসায় ওষুধের ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত বিষয়। অনেক অভিভাবক এবং পেশাদাররা এই বিষয়ে চিন্তিত থাকেন। প্রশ্ন হলো, শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধ কী আসলেই ক্ষতিকর? এর সাইড ইফেক্ট এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি।
শিশুদের মানসিক রোগের সাধারণ লক্ষণ
শিশুদের মধ্যে মানসিক রোগের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যেমন:
- অতিরিক্ত উদ্বেগ
- ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা
- আচরণগত সমস্যা
- ঘুমের সমস্যা
- খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন
- সামাজিক সম্পর্কের সমস্যা
শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধের প্রকারভেদ
শিশুদের মানসিক রোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যেমন:
- অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস:
- বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- অ্যান্টি-অ্যানজাইটি ড্রাগস:
- উদ্বেগ এবং প্যানিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- অ্যান্টিপসাইকোটিকস:
- স্কিৎজোফ্রেনিয়া এবং বাইপোলার ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- মুড স্ট্যাবিলাইজারস:
- বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মুড সুইং নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।
শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধের সাইড ইফেক্ট
শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধের কিছু সাধারণ সাইড ইফেক্ট রয়েছে, যা নীচে উল্লেখ করা হলো:
- শারীরিক সাইড ইফেক্ট:
- মাথাব্যথা
- বমিভাব বা বমি
- ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস
- হৃৎস্পন্দনের পরিবর্তন
- মানসিক সাইড ইফেক্ট:
- ঘুমের সমস্যা
- উদ্বেগ বা উদ্বেগ বৃদ্ধি
- বিষণ্ণতা বা মনমরা ভাব
- স্মৃতিশক্তির সমস্যা
ওষুধের দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি
শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে:
- আসক্তি:
- কিছু ওষুধের আসক্তি তৈরি হতে পারে, যা বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
- লং-টার্ম হেলথ ইফেক্ট:
- দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে কিছু ওষুধের লিভার, কিডনি বা হার্টের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।
- বাড়তি স্বাস্থ্য সমস্যা:
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন থাইরয়েড সমস্যা বা ডায়াবেটিস।
সাইড ইফেক্ট মোকাবেলার উপায়
শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধের সাইড ইফেক্ট মোকাবেলার জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে:
- ডাক্তারের সাথে পরামর্শ:
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে প্রথমেই ডাক্তারকে জানানো উচিত। ডাক্তার ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করতে পারেন বা বিকল্প ওষুধ দিতে পারেন।
- লাইফস্টাইল পরিবর্তন:
- সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত রাখতে সাহায্য করে।
- মনিটরিং:
- ওষুধের ব্যবহার মনিটরিং করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
উপসংহার
শিশুদের মানসিক রোগের ওষুধ ভয়ঙ্কর নয়, তবে এর সাইড ইফেক্ট এবং ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধের সাইড ইফেক্ট মোকাবেলা করা সম্ভব। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ওষুধ এবং জীবনধারা অনুসরণ করা অপরিহার্য।
Writer:
Raju Akon, MPhil-DU, Counselling Psychologist at PMHCC