শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৭ মাস বয়সী শিশুর খাবারে ধীরে ধীরে শক্ত খাবার সংযুক্ত করা শুরু হয়। এই সময়ে বুকের দুধ বা ফর্মুলা মিল্কের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার দেওয়া দরকার যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে। এই ব্লগ পোস্টে ৭ মাসের শিশুর জন্য উপযুক্ত খাবারের তালিকা, খাদ্য পরিকল্পনা ও গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা করা হবে।
৭ মাসের শিশুর জন্য আদর্শ খাবার
১. মায়ের দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক
- শিশুর প্রধান পুষ্টির উৎস হিসেবে মায়ের দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক চালিয়ে যেতে হবে।
- দিনে ৪-৫ বার মায়ের দুধ বা ফর্মুলা দেওয়া যেতে পারে।
২. সেমি-সলিড বা নরম খাবার
- চালের নরম খিচুড়ি
- ডাল বা শাকসবজি মিশ্রিত পাতলা পায়েস
- নরম করে সেদ্ধ করা আলু, মিষ্টি আলু বা গাজরের পিউরি
- কলা, পেঁপে বা আপেলের পিউরি
৩. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার
- মুগডাল, মসুর ডাল বা মাষকলাই ডালের পাতলা স্যুপ
- ভালোভাবে রান্না করা ডিমের কুসুম (প্রথমবার অল্প পরিমাণে দিতে হবে)
- মাছের পিউরি (কাঁটা ছাড়া ও ভালোভাবে রান্না করা)
৪. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
- ছোট পরিমাণে টকদই
- সুজি বা ওটসের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে হালকা করে রান্না করা খাবার
৫. শাকসবজি ও ফলমূল
- ভালোভাবে সেদ্ধ করা গাজর, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, পালং শাক
- কলা, পেঁপে, আপেল, নাশপাতির পিউরি
৬. শিশুর জন্য উপযুক্ত শস্যজাতীয় খাবার
শিশুর খাবার সময়সূচি (উদাহরণ)
সময় | খাবার |
সকাল | মায়ের দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক |
সকাল ১০টা | কলা পিউরি বা সেদ্ধ করা গাজর |
দুপুর | নরম খিচুড়ি বা ডালের স্যুপ |
বিকেল | টকদই বা সুজি |
রাত | মায়ের দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক |
শিশুর খাবার খাওয়ানোর গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- নতুন খাবার ধীরে ধীরে ও অল্প পরিমাণে পরিচিত করান।
- একবারে একটি নতুন খাবার দিন এবং ৩-৪ দিন অপেক্ষা করুন কোনো অ্যালার্জি বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় কিনা।
- অতিরিক্ত চিনি বা লবণ যোগ করবেন না।
- শিশুকে পর্যাপ্ত পানি দিন, তবে খাবারের সঙ্গে খুব বেশি পানি দেবেন না।
- শিশুকে নিজে খেতে শেখানোর জন্য তার হাতে নরম খাবার দেওয়ার চেষ্টা করুন।
উপসংহার
৭ মাসের শিশুর খাবারের তালিকা এমনভাবে পরিকল্পনা করা উচিত যাতে শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় এবং সে ধীরে ধীরে শক্ত খাবারের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সঠিক পুষ্টিকর খাবার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিটি শিশুর পছন্দ ও সহনশীলতা আলাদা, তাই তার স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে ধাপে ধাপে নতুন খাবার যোগ করুন।