গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীর অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এ সময় ঠান্ডা লাগা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি মা এবং সন্তানের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। ঠান্ডা লাগলে সঠিক ব্যবস্থা না নিলে এটি জটিল রোগে রূপ নিতে পারে। তাই এই সময়ে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগার কারণ
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস: গর্ভাবস্থায় মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়, যা ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বাড়ায়।
২. আবহাওয়া পরিবর্তন: তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন ঠান্ডা লাগার অন্যতম কারণ।
৩. ভাইরাস সংক্রমণ: ঠান্ডার ভাইরাস সহজেই সংক্রমিত হতে পারে, বিশেষ করে ভিড় এলাকায়।
৪. অপর্যাপ্ত বিশ্রাম: পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, যা ঠান্ডার কারণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ঠান্ডার লক্ষণ
১. নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে পানি পড়া। ২. গলা ব্যথা বা শুষ্কতা। ৩. হালকা থেকে মাঝারি জ্বর। ৪. সর্দি বা কাশি। ৫. মাথা ব্যথা বা ক্লান্তি।
ঠান্ডা হলে করণীয়
১. প্রচুর বিশ্রাম নিন:
- শরীরকে সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম অত্যন্ত জরুরি।
২. পুষ্টিকর খাবার খান:
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, যেমন লেবু, কমলা, এবং আমলকী খাবারের তালিকায় রাখুন।
৩. গরম পানি পান করুন:
- ঠান্ডার কারণে গলা ব্যথা বা শুষ্কতা কমাতে গরম পানি উপকারী।
৪. ভাপ নিন:
- নাক বন্ধ থাকলে গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ হয়।
৫. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন:
- আদা চা, মধু এবং তুলসী পাতার রস ঠান্ডা কমাতে সাহায্য করে।
৬. ভিড় এড়িয়ে চলুন:
- ঠান্ডা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে বেশি লোকসমাগম এড়িয়ে চলুন।
৭. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- যদি ঠান্ডা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা জ্বর বেড়ে যায়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
গর্ভাবস্থায় কী করবেন না?
১. স্বেচ্ছায় ওষুধ গ্রহণ করবেন না:
- গর্ভাবস্থায় অনেক ওষুধ খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
২. অত্যধিক কাজ করবেন না:
- অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ঠান্ডা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩. ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলুন:
- ঠান্ডা লাগার সময় ঠান্ডা পানীয় বা বরফ মিশ্রিত খাবার এড়িয়ে চলুন।
উপসংহার
গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগলে দুশ্চিন্তা না করে প্রাকৃতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। তবে জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। নিজের এবং অনাগত সন্তানের সুস্থতার জন্য সবসময় সচেতন থাকুন।
