মানবদেহে সাধারণত দুটি কিডনি থাকে, তবে একজন ব্যক্তি যদি একটি কিডনি হারিয়ে ফেলেন বা জন্মগতভাবে একটি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন, তার জীবনযাপন সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক হতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা ও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হতে পারে।
একটি কিডনি না থাকলে শরীরে যে পরিবর্তনগুলো হতে পারে:
- কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়:
- যখন একজনের একটি কিডনি থাকে, তখন সেই কিডনিটি সাধারণত বাড়তি কাজের চাপ বহন করে। এটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কার্যক্ষম হয়ে কাজ করে এবং এর ফলে একজন ব্যক্তির শরীরের প্রয়োজনীয় পরিমাণে তরল এবং বর্জ্যপদার্থ পরিশোধন করতে সক্ষম হয়।
- স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব:
- এক কিডনির সাথে একজন ব্যক্তির সুস্থভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে এই অবস্থা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
- কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে:
- যেহেতু একটি কিডনি পুরো কাজ করছে, তাই এটি আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। কোনো সংক্রমণ বা আঘাতের কারণে কিডনির ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- উচ্চ রক্তচাপ:
- কিডনির কার্যক্ষমতার সাথে রক্তচাপের সম্পর্ক রয়েছে। একটি কিডনি থাকলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হতে পারে, তাই উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশন রেট (GFR) হ্রাস পায়:
- GFR হলো কিডনির পরিশোধন ক্ষমতার একটি মাপকাঠি। দুটি কিডনি থাকলে যে পরিমাণ GFR থাকে, একটি কিডনি থাকলে তা কিছুটা কমে যায়। যদিও এটি শরীরের তরল নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে না, তবে এটি চিকিৎসার সময় গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
- ডায়াবেটিস এবং কিডনির ওপর প্রভাব:
একটি কিডনি থাকলে করণীয়:
- নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া: একজন চিকিৎসকের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকা উচিত এবং কিডনির ফাংশন নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।
- সতর্ক জীবনযাপন: স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল পরিহার করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা ইত্যাদি কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা: কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রচুর পানি পান করা: পর্যাপ্ত পানি পান করা কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
একটি কিডনি নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব, তবে কিছু বিশেষ সতর্কতা এবং নিয়মিত চেকআপের প্রয়োজন। একজন ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য পরামর্শদাতার সাথে নিয়মিত পরামর্শ এবং শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারেন।
